দ্বীপান্তরে তিন দিন-২: দ্বীপ থেকে দ্বীপান্তরে যাত্রা শুরু

দ্বীপান্তরে তিন দিন

আমাদের এই ট্যুরটা ছিল নাটকীয়তায় ভরপুর। একের পর এক twist… এক একজন করে ট্যুর ক্যানসেল করছে, শেষে দেখা গেল আমি ছাড়া কেউ নেই। ট্যুর ক্যানসেল করি তো আবার কাউকে পাই। দু’ তিন বার ট্যুর ক্যানসেল করে আবার ডিসাইড করি, না যাবই যাব। ট্রাভেলার আমি ও রফিক ভাই। দু’জন ব্যাগ গুছিয়ে লঞ্চে উঠে গেছি। এমন সময় নাটকের শেষ দৃশ্যে আরেক জন হাজির। অবশেষে নাটকের শেষ দৃশ্যে আমি এবং ট্রাভেলার্স এক্সপ্রস-এর রফিক ভাই ও আরো একজন মোট তিনজন মিলেই যাত্রা শুরু হয় ‘তিন দিনের দীপান্তরে’। কচ্ছপিয়া ঘাটে পরিচয় হয় আরো তিন জন ট্রাভেলারের সাথে। এরপরের গল্পটা আমাদের ৬ জনকে নিয়েই!

আমরা ঘুরেছি চর কুকরি মুকরি, সোনার চর, শীপ চর এবং সর্বশেষ ঢাল চর। এতো বেশি বৈচিত্র্যময় ছিল ট্যুরটা যে নিঃসন্দেহে বলতে পারি বছরের সেরা ট্যুর ছিল এটা। সাগরে পথ হারিয়ে দুঘন্টার পথ সাড়ে তিন ঘন্টায় পৌছা আর সন্ধ্যে বেলা সরু এক খাল ধরে ভুল পথে অনেক দূর এগিয়ে গিয়ে অমানবিক পরিশ্রম করে নৌকা খাল থেকে বের করে আনায় ছিল অ্যাডভেঞ্চারের ষোল কলা পূর্তি। সে গল্পটাই হোক তাহলে ছবিতে ছবিতে…. কারন – “A picture is worth a thousand words.” So, lets start…২২ ডিসেম্বর সন্ধ্যা – ২৬ ডিসেম্বর সকাল, ২০১৬

প্রথম দিন আমরা ছিলাম চর কুকরি মুকরিতে। ২য় দিন সকালে ট্রলার রিজার্ভ করে রওনা হই সোনার চরের দিকে। সোনার চর ঘুরে চলে যাই শীপ চরে। শীপ চর থেকে সমুদ্রে পথ ভুলে দেড় ঘন্টা বেশি সময় লাগিয়ে পৌছাই তাড়ুয়া বীচের কাছে। সেখান থেকে ঢাল চর। ঢাল চরে যাওয়ার পথে আবারও পথ হারিয়ে জনমানবহীন জঙ্গলে ঢুকে পরি আমরা। শেষে দেখি বেরুনোর কোন পথ নেই। সবচেয়ে অবাক করা ঘটনা হচ্ছে, ওখানকার থেকে অনেক কষ্টে ট্রলার উল্টো ঠেলে নিয়ে বেরিয়ে আসতে আসতে সন্ধা হয়ে যায় এবং ওখানকার ভিতরের দিকে তোলা কোন ছবিই আমাদের কারো মোবাইল ও ক্যামেরায় খুঁজে পাইনি ঢাল চরে পৌঁছার পর। রাতে ঢাল চরে থাকা। সকালে ঢাল চর থেকে আমাদের চিরচেনা গন্তব্য ঢাকার পথে ফিরে আসা। এবার, ছবিতে বাকি গল্প….

সোনার চর: যে দ্বীপে হারিয়ে গিয়েছিলাম ইচ্ছে করেই…

বঙ্গোপসাগরের বুক চিড়ে জেগে ওঠা দীর্ঘ সৈকত সমৃদ্ধ অনিন্দ সুন্দর দ্বীপ “সোনার চর” “The Golden Beach” এ ট্রাভেলার্স এক্সপ্রেস-এর কয়েক যাত্রী…

শীপ চরেও গেছিলাম। জন-মানবহীন ভূতুড়ে দ্বীপ। সাগরের মাঝে! এখান থেকে ফেরার পথে মাঝি পথ হারাই ফেলছিল!!!

আপনারা তো ঘুমে অচেতন… আমি আর মাঝি জেগে ছিলাম… পরে দুই ঘন্টার পথ সাড়ে তিন ঘন্টায়ও শেষ না হওয়ায় সন্দেহ হয় ঘন কুয়াশার কারণে পথ ভুলে গেছে মাঝি… আমার মোবাইলের তিন সিমেই নেটওয়ার্ক মিসিং তাই সাথে থাকা মিনি কম্পাস বের করে মাঝিকে দিক বলে দেই… আর  Ariful Rajib কে ঘুম থেকে ডেকে তুলে ওনার মোবাইলে নেট চালু করে গুগল ম্যাপের মাধ্যমে আমাদের সঠিক অবস্থান নির্নয় করি।

অবশ্য হারিয়ে যাওয়ার পর রফিক ভাই বলছিল: আকিক ভাই, কি দরকার ছিল দিক ঠিক করার। যাইতাম গা আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে…. যাক, বিপদ ঘুমের মধ্যে কাইট্টা গেছে… টের পাই নাই…. 🙂 জোসস একটা অ্যাডভেঞ্চারাস voyage হয়ে গেল…

 

মূল লেখা: @Rafiqul Islam

About Akik Russel-আকিক রাসেল

একজন মানুষ। একজন অনুগত মুসলিম। আল্লাহর দুনিয়ার প্রাকৃতিক নৈসর্গিক সৌন্দর্য দেখতে ঘুরে বেড়াতে ভালবাসি।

Posted on নভেম্বর 24, 2017, in ভ্রমণ, Uncategorized. Bookmark the permalink. এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান.

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান