Monthly Archives: মার্চ 2015

লালাখাল, বাংলাদেশের “কালার অব প্যারাডাইস”

লালাখাল, বাংলাদেশের “কালার অব প্যারাডাইস”

1411979726.

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপরূপ লীলাভূমি সিলেটের লালাখাল। সিলেট শহর হতে প্রায় ৩৫ কি.মি. দূরে জৈন্তাপুর উপজেলায় লালাখাল। পাহাড়, নদী, চা-বাগান ও নানা জাতের বৃক্ষের সমাহার এই স্থানটিকে পর্যটকদের কাছে এক বহু কাঙ্খিত ও বহু প্রতীক্ষিত এক স্থান। স্বচ্চ নীল জল রাশি আর দু’ধারের অপরুপ সোন্দর্য, দীর্ঘ নৌ পথ ভ্রমনের সাধ যেকোন ভ্রমণ পিপাসুর কাছে এক দূর্লভ আর্কষণ। ভ্রমন প্রিয়াসীদের আর্কষিত করার নির্জন মনকাড়া সৌন্দর্য মন্ডিত ভ্রমন স্পট লালাখাল। স্বচ্ছ নীল পানির নদী, অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নৌ ভ্রমণ, পাহাড়ে ঘন সবুজ গাছ, সব কছু মিলিয়ে প্রকৃতিকে একান্তে অনুভব করতে পারার জন্য বেশ উপযোগী একটি স্থান। বাংলাদেশের সবোর্চ্চ বৃষ্টিপাতের স্থান এটি। নৌপথে যেতে যেতে যে দিকে চোখ যায় মুগ্ধ হতে হবে সবাইকে। ভারতের চেরাপুঞ্জির ঠিক নিচেই লালাখালের অবস্থান। চেরাপুঞ্জি পাহাড় থেকে উৎপন্ন এই নদী বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত। তবে পানির নীল রং দেখতে চাইলে শীতের সময়ে যাওয়া ভালো – বর্ষা হলে পানির রং টা তেমন নীল থাকে না।
সারি নদীর স্বচ্চ জলরাশির উপর দিয়ে নৌকা অথবা স্পীডবোটে করে আপনি যেতে পারেন লালা খালে। যাবার পথে আপনির দুচোখ সৌন্দর্য দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে যাবেন কিন্ত সৌন্দর্য শেষ হবে না। ৪৫ মিনিট যাত্রা শেষে আপনি পৌছে যাবেন লালখাল চা বাগানের ফ্যাক্টরী ঘাটে। মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকবেন নদীর পানির দিকে। কি সুন্দর নীল, একদম নীচে দেখা যায়। ভারতের চেরাপুঞ্জির ঠিক নিচেই লালাখালের অবস্থান। চেরাপুঞ্জি পাহাড় থেকে উৎপন্ন এই নদী বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত।

কিভাবে যাওয়া যায়:
সিলেট শহর হতে লালাখাল যাবার জন্য আপনাকে পাড়ি দিতে হবে ৩৫ কি.মি রাস্তা। আপনি অনেক ভাবে লালাখাল যেতে পারেন। বাস, মাইক্রো, টেম্পু যোগে আপনি যেতে পারেন। সিলেটে থেকে জাফলং যাবার বাসে উঠে সারি নদীর ব্রীজের কাছে নামতে হবে.. সেখানে নেমে সারি নদীর উৎস মুখে গেলে সেটাই লালা খাল নামে পরিচিত। সেখান থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকা কিংবা স্পিড বোট নিয়ে ঘুরে দেখবেন অপরূপ নীল জলরাশির লালাখাল- বাংলাদেশের “কালার অব প্যারাডাইস”। নৌকা ভাড়া ৮০০ টাকা, স্পিড বোট ভাড়া ১৫০০-২০০০ টাকা। ইঞ্জিন চালিত নৌকায় ৪৫ মিনিট এর নৌ ভ্রমণ। নৌকায় কমপক্ষে ১৫- ২০ জনের বসার ব্যবস্থা আছে, ভাড়া একই। একা যাওয়া কস্টকর হবে। নৌকা ভাড়া রিজার্ভ নিলে ১৫০০ টাকা। আর লোকাল নৌকা সবসময় পাওয়া যায়না।
তবে সারা দিনের জন্য একটি মাইক্রেবাস বা প্রাভেট কার ভাড়া নিলে ভালো হয়। বেশী লোক হলে মাইক্রো ভাড়া নেয়া ভালো। এতে খরচ টা কম হবে। মাইক্রোর ভাড়া ২০০০-২৫০০ টাকা, কার এর ভাড়া ১৫০০-১৬০০ টাকা। খুব ভোরে যদি সিলেট থেকে রওয়ানা দেয়া যায়, তবে লালাখাল দেখে বিকেলটা জাফলং এ কাটাতে পারবেন। সিলেট থেকে জাফলং সড়কের গোয়াইন ঘাট নামতে হবে।
লালাখালের যেখানে নৌযান ভিড়বে ওখানেই আছে খুব সুন্দর এক চা বাগান সহ ফ্যাক্টরি । বাগানটিও খুব পরিচ্ছন্ন এবং সুন্দর।
থাকবেন কোথায়:
লালাখালের আশেপাশে থাকার তেমন কোন সুবিধা নাই। সাধারনত পর্যটকরা সিলেট শহর হতে এসে আবার সিলেট শহরে হোটেলে রাত কাটায়। সাম্প্রতিক নাজিমগড় রিসোর্ট নামে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত পিকনিক স্পট গড়ে তোলার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

15669212802_af42285db2 397811_212461425502539_768496838_n 395657_212460995502582_1470274953_n 401751_212462142169134_831517605_n 379022_212460815502600_2002710283_n 75056_2683443581048_1803956343_n untitled8untitled6  untitled5  untitled4 untitled33 untitled3 untitled2 untitled

untitled66

Sylhet_TeaGarden

লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্ক

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান

লাউয়াছড়া যাবার পথে চোখে পড়বে চোখ জুড়ানো চা বাগান, পাহাড়, বন বনানী, উঁচু-নিচু টিলা শ্রেণী, আনারস, লিচু ও লেবু বাগান। স্থানীয় চা শ্রমিকদের ছোট ছোট ঝুপড়ি ঘর। পাখ-পাখালির কূজন, আর চারিদিকে সবুজের ছড়াছড়ি যেন সবুজ একটি স্বর্গ রাজ্য। লাউয়াছড়ায় প্রবেশ করা মাত্রই শুনতে পাওয়া যাবে ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক। গাছে গাছে পাখিদের কিচির-মিচির। মূল রাস্তার দু-ধারে বিশাল-বিশাল বনজ বৃক্ষের বহর দেখলে মনে হয় প্রকৃতি যেন তার নিকট যাবার পথটা তৈরি করে রেখেছে আমাদের জন্য।

উদ্যানের ভিতরে রেললাইন  lawacherra

নৈসর্গ প্রকল্পের আওতায় লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে প্রকৃতি ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নির্দিষ্ট হারে প্রবেশ মূল্য দিয়ে এ বনের ভেতর প্রকৃতি ভ্রমণ করা যায়। প্রকৃতি ভ্রমণের জন্য বনে তিনটি ট্রেইল বা হাঁটা পথ রয়েছে। তিনটি পথের মধ্যে একটি ৩ ঘণ্টার পথ, একটি ১ ঘণ্টার পথ আর অপরটি ৩০ মিনিটের পথ। প্রশিক্ষিত গাইডের সহায়তায় বনের একেবারে ভেতর পর্যন্ত যাওয়া যায়। প্রকৃতিকে বিরক্ত না করে তৈরি করা এ তিনটি পথে চোখে পড়বে নানা প্রজাতির কীটপতঙ্গ, গাছপালা, পাখি ও অর্কিড। ভাগ্য ভালো হলে হনুমান, বানর এবং উল্লুকেরও দেখা মিলতে পারে। দেশ-বিদেশের অসংখ্য পর্যটক প্রতিদিন লাউয়াছড়ায় প্রকৃতি ভ্রমণে আসেন। বছরজুড়েই এই বনে পর্যটকদের আনাগোনা থাকলেও শীতের সময় সবচেয়ে বেশি লোকসমাগম হয়।

আধ ঘণ্টার ট্রেকিং: এ পথটির শুরু রেললাইন পেরিয়ে হাতের বাঁ দিক থেকে। এ পথের শুরুতে উঁচু উঁচু গাছগুলোতে দেখা মিলতে পারে কুলু বানরের। নানা রকম গাছ-গাছালির ভেতর দিয়ে তৈরি করা এ হাঁটা পথটিতে চলতে চলতে জঙ্গলের নির্জনতায় শিহরিত হবেন যে কেউ। এ ছাড়া এ পথের বড় বড় গাছের ডালে দেখা মিলবে বুনো অর্কিড। যদিও এ সময়টা অর্কিডে ফুল ফোটার সময় নয়। নির্দেশিত পথে হাতের বাঁয়ে বাঁয়ে চলতে চলতে এই ট্রেইলটির শেষ হবে ঠিক শুরুর স্থানেই।

এক ঘণ্টার ট্রেকিং: এক ঘণ্টার ট্রেকিংয়ের শুরুতেই দেখবেন বিশাল গন্ধরুই গাছ। এ গাছের আরেক নাম কস্তুরী। এগাছ থেকে নাকি সুগন্ধি তৈরি হয়। এ ছাড়া এ পথে দেখবেন ঝাওয়া, জগডুমুর, মুলী বাঁশ, কাঠালি চাঁপা, লেহা প্রভৃতি গাছ। আরো আছে প্রায় শতবর্ষী চাপলিশ আর গামারি গাছ। এ ছাড়া এ পথে নানারকম ডুমুর গাছের ফল খেতে আসে উলস্নুক, বানর, হনুমান ছাড়াও এ বনের বাসিন্দা আরো অনেক বন্যপ্রাণী। ভাগ্য সহায় হলে সামনেও পড়ে যেতে পারে। এ ছাড়া এ পথে দেখা মিলতে পারে মায়া হরিণ আর বন মোরগের।

তিন ঘণ্টার ট্রেকিং: তিন ঘণ্টার হাঁটা পথটিও বেশ রোমাঞ্চকর। এ পথের বাঁয়ে খাসিয়াদের বসত মাগুরছড়া পুঞ্জি। এ পুঞ্জির বাসিন্দারা মূলত পান চাষ করে থাকেন। ১৯৫০ সালের দিকে বনবিভাগ এ পুঞ্জি তৈরি করে। এ পথে দেখা মিলবে বিশাল বাঁশবাগান। এ বাগানে আছে কুলু বানর আর বিরল প্রজাতির লজ্জাবতী বানর। লজ্জাবতী বানর নিশাচর প্রাণী। এরা দিনের বেলায় বাঁশের ঝারে ঘুমিয়ে কাটায়। এ ছাড়া এ পথে দেখা মিলবে নানান প্রজাতির পাখির, আর পথের শেষের দিকে দেখা মিলতে পারে এ বনের অন্যতম আকর্ষণ উলস্নুক পরিবারের। এরা বনের সবচেয়ে উঁচু গাছগুলোতে দলবদ্ধভাবে বাস করে।

উদ্যান  800px-Ulluk-2

বাঁশ ও বেত বন

লাউয়াছড়ার পশ্চিম প্রান্তে একটি গ্রাম দেখতে পাওয়া যায়। গ্রামটি মূলত খাসিয়া পল্লী (পুঞ্জি) খাসিয়াদের ভাষায়। ছোট একটি ছড়া পার হয়েই খাসিয়া পল্লীতে প্রবেশ করতে হয়। টিলার উপর দেখতে পাওয়া যাবে খাসিয়াদের মাচাং ঘর, আনারস বাগান ও তাদের জীবিকা নির্বাহের প্রধান উৎস পান চাষের বরজ বা ক্ষেত। পান চাষ করতে খাসিয়া পুরুষরা চারা রোপন, গাছের উপর উঠে পান নামানো ইত্যাদি কাজ করে থাকে। মেয়েদের কাজ পানগুলো পানি দিয়ে ধুয়ে আটি বেঁধে পাইকারদের নিকট বিক্রি করা। খাসিয়াদের বর্ণাঢ্য জীবনধারা সত্যিই চমৎকার।

Kawser_Rhuso_1315248127_5-DSC08303  Kawser_Rhuso_1315248203_6-DSC02686

লাউয়াছড়ার প্রবেদ্বার

লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্কের প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ২০ টাকা, শিশুদের জন্য ১০ টাকা আর গাড়ি পার্কিং এর জন্য ২৫ টাকা। তাছাড়া গাইড নিতে চাইলে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত তিন ক্যাটাগরির গাইড পাওয়া যায়। যেহেতু আমরা এখানে বেশি সময় থাকবো না তাছাড়া আমি এর আগেও একবার এসেছি তাই আমরা কোন গাইড নিলাম না। আমার পরামর্শ থাকবে আপনারাও কেউ গাইড নিবেন না। এই বনের ভেতরে বেরানোর জন্য গাইডের দরকার পরে না। ভেতরের তিনটি রাস্তার যেকোনো একটা রাস্তা ধরে আপনি পুরটা বাগান বেরিয়ে আসতে পারবেন।

যাইহোক টিকেট কেটে ভিতরে যাওয়ার সময় প্রবেশ দারেরই দেখবেন আপনাকে স্বাদর নিমন্ত্রণ জানাচ্ছে পথের দুই ধারের বিশাল বড় বড় রক্তন গাছ। বড় বড় গাছগুলি দুপাশ থেকে এসে আপনার মাথার অনেক উপরে তৈরি করেছে সবুজের আচ্ছাদন। ঘন সবুজ মিশ্র চিরহরিৎ বনের ফাঁক দিয়ে সূর্যের সোনালী আলো এসে লুটাবে আপনার পায়ের কাছে। এখান থেকেই পথের দুই ধারে শুরু হয়েছে ঘন ঝোপ। এক ধরনের ঝিঁঝি পোকার তীব্র সাইরেনের মত ডাক আমাদের কান ঝালাপালা করে দিচ্ছিল এই পথে যাওয়ার সময়।

এই পথ ধরে কিছুটা এগিয়ে গেলেই সামনে একটা ছোট্ট কালভার্ট , নিচে ঝিরি ঝিরি বয়ে চলেছে স্বচ্ছে জল। নিচের লালচে হলুদ বালি আর স্বচ্ছ জলের খেলা। একটু ভাল করে লক্ষ্য করলেই দেখতে পাবেন জলে রয়েছে জলেরই মত স্বচ্ছে কিছু খুদে মাছ। নিচে নামর রাস্তা আছে ডান দিক দিয়ে। এই ছড়া ধরে ভিতরের দিকে অনেকটা পথ হেঁটে আসা যায়। বনের গভীরে আরো একটা ছড়া আছে।

লাউয়াছড়ার ছড়া

কালভার্ট পেরিয়ে আর কিছুটা সমনে গেলে আছে মসজিদ, মসজিদ পেরিয়ে সমনে গেলেই দেখতে পাবেন বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর রেল পথের অংশটুকু। সাবধান থাকবেন, এই অংশে কোন গেট ম্যান নাই। লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পাকের মিশ্র চিরহরিৎ বনের বুক চিরে দুই ধারে চলে গিয়েছে চির সমান্তরাল রেল পথ। এই পথের উপরে বসে আর হেঁটেই অনেকটা সময় কাটিয়ে দেয়া যায়। আমরা যখন এই রেল পথের কাছা কাছি এসেছি তখনই একটা ট্রেন তার কুউউউ….. ঝিক ঝিক… শব্দে জানান দিয়ে গেলে যে সে যাচ্ছে এই পথ ধরে। একটুর জন্যে মিস একরে ফেললাম আমরা সেই দৃশ্যটা দেখা থেকে।

1212

লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্ক (রেল লাইন)

রেল গেইটে গেইট ম্যান নাই তাই কোন বাধাও নাই ভাববেন না যেন, নিজেই সাবধান থাকবেন। রেল লাইন ধরে ডান বা বাম দিকের যেকোনো দিকে অনেক দূর পর্যন্ত হেঁটে আসতে পারেন খারাপ লাগবেনা। আমাদের হাতে সময় কম থাকার দরুন আমরা সেদিকে পা না বাড়িয়ে পাশের টিলাতে থাকা সাতরঙা চায়ের দোকানে উঠে গেলাম। অনেকটা সময় নষ্ট হল চা আসার অপেক্ষায় থেকে, তারপর হাটা ধরলাম বনের ভিতরের দিকে।

10682309_10203901105826018_8965335250322430985_o

বনভ্রমণের জন্য বনে তিনটি ট্রেইল বা হাঁটা পথ রয়েছে আগেই বলেছি। তিনটি পথের মধ্যে একটি ৩ ঘণ্টার পথ, একটি ১ ঘণ্টার পথ আর অপরটি ৩০ মিনিটের পথ। খুব বেশী ভিতরে যাইনি আমরা। নানান গাছ গাছালি আর ঝোপে ছাওয়া পায়ে চলা ট্রেইল ধরে এগিয়ে যাই অনেকটা পথ। মুহু মুহুই শোনা যেতে থাকে নানান ধরনের পাখির ডাক আর পোকাদের কলতান। প্রচণ্ড ভালোলাগা থাকলেও পুরটা পথ না গিয়েই ফিরতি পথ ধরি আমরা সময় বাঁচাতে। বনের ভিতরের কিছু ছবি দেখিন শেষ করার আগে।

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে কিছু তথ্য:
বর্তমানে জীব বৈচিত্র্যের দিক থেকে লাউয়াছড়ার জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের সমৃদ্ধ-তম বনগুলোর একটি। লাউছড়ার জাতীয় উদ্যানে ১৬৭ প্রজাতির উদ্ভিদ, ৪ প্রজাতির উভচর, ৬ প্রজাতির সরীসৃপ, ২৪৬ প্রজাতির পাখি এবং ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী দেখা যায়।

বিলুপ্তপ্রায় উল্লুকের জন্য এ বন বিখ্যাত। বনের মধ্যে কিছু সময় কাটালেই উল্লুকের ডাকাডাকি কানে আসবে। উল্লুক ছাড়াও এখানে রয়েছে মুখপোড়া হনুমান, বানর, শিয়াল, মেছো-বাঘ, বন্য কুকুর, ভাল্লুক, মায়া হরিণ (বার্কিং ডিয়ার),অজগরসহ নানা প্রজাতির জীবজন্তু।

উদ্যানের বন্য পাখির মধ্যে সবুজ ঘুঘু, বনমোরগ, তুর্কি বাজ, সাদা ভ্রু সাতভায়লা, ঈগল, হরিয়াল, কালো-মাথা টিয়া, কালো ফর্কটেইল. ধূসর সাত শৈলী, পেঁচা, ফিঙ্গে, লেজকাটা টিয়া, কালোবাজ, হীরামন, কালো-মাথা বুলবুল, ধুমকল প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।

বনের শেষে আছে আদিবাসীদের গ্রাম, ওদের লেবু বাগান, আছে ছড়ায় বয়ে চলা ঝিরি ঝিরি জলের ধারা। শুধু আদিবাসীদের গামের ভিতরে ঢুকবেন না, আর লেবু বাগান থেকে লেবু ছিঁড়বেন না, তাহলেই হবে। ওদের সাথে খারাপ ব্যবহার না করলে ওরা খুবই শান্ত প্রকৃতির আচরণ করবে, সেধে বা আগবাড়ায়ে ওদের সাথে মিশতে যাবেন না তাহলেই হল।

যেভাবে যাবেন :
প্রথমে যেতে হবে শ্রীমঙ্গল । শ্যামলী হানিফ বাস ভাড়া ৩২০ টাকা । শ্যামলী ১ ঘণ্টা পর পর বাস আছে রাত ৯ :৩০ পর্যন্ত । হানিফ এর শেষ বাস ১১ :২০ ।
ট্রেন পারাবত সকাল ৬:৪৫ , জয়েন্তিকা ২:০০ , উপবন রাত ১০:০০ ।

যাওয়ার খরচা খুব বেশি হবে না নিশ্চই। কিভাবে যাবেন তার উপরে নির্ভর করছে।
প্রবেশ মূল্য ২০টাকা, শিশু ও ছাত্র ১০টাকা। বিদেশীদের জন্য ৫ ডলার।
গাড়ি পারর্কিং ২৫ টাকা।
পিকনিং স্পট ব্যবহার জন প্রতি ১০ টাকা।
ভিতরে বা আশে পাশে খাবারের কোন ব্যবস্থা নাই, নিজ দায়িত্বে করে নিতে হবে।

ঢাকা থেকে রেল ও সড়ক পথে শ্রীমঙ্গল যাওয়া যায়। ঢাকার ফকিরাপুল ও সায়দাবাদ থেকে হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন, সিলেট এক্সপ্রেস, টি আর টন্সাভেলস  ইত্যাদি বাস যায় শ্রীমঙ্গল। ঢাকা থেকে ট্রেনেও যাওয়া যায় শ্রীমঙ্গল। ঢাকার কমলাপুর থেকে মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন সকাল ৬·৪০ মিনিটে ছেড়ে যায় আত্ম:নগর ট্রেন পারাবত এক্সপ্রেস, দুপুর ২·০০ মিনিটে প্রতিদিন ছাড়ে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস এবং বুধবার ছাড়া সপ্তাহের প্রতিদিন রাত ১০·০০ মিনিটে ছাড়ে উপবন এক্সপ্রেস। শ্রীমঙ্গল থেকে ভানুগাছ-কমলগঞ্জের রাস্তায় ৭ কি·মি· এগুলেই লাউয়াছড়া পার্কের সীমানা। শ্রীমঙ্গল ভানুগাছ রোড থেকে বাসে, প্রাইভেট কারে বা  অটোরিক্সায় যেতে পারবেন।

লাউয়াছড়া যাবেন :
সিএনজি করে যেতে পারেন যাওয়া আসা ঘণ্টা খানিক থাকা ৬০০ এর কম না । টুকু ভাই ০১৭১০৩৮৩৫৬১
জিপ এ গেলে ভাড়া বেশী । আফজাল ০১৭৪১০৮৯৭৬৯

বাস এ যেতে হলে রিক্সা করে চলে আসুন ভানুগাছা রোড বাস স্ট্যান্ড , সেখান থেকে বাস ভাড়া ১০ টাকা করে ।

কোথায় থাকবেন:

লাউয়াছড়ায় রয়েছে ১টি ফরেস্ট রেস্ট হাউজ, ফরেস্টের অনুমতি নিয়ে আপনি লাউয়াছড়া রেস্ট হাউজেই থাকতে পারেন। শ্রীমঙ্গলে থাকার জন্য ভালো মানের জায়গা ভানুগাছ রোডে টি রিসর্ট (০১৭১২৯১৬০০১)। শ্রীমঙ্গলের হবিগঞ্জ সড়কে আরেকটি ভালো আবাসন ব্যবস্থা হলো রেইন ফরেস্ট রিসোর্ট (০১৯৩৮৩০৫৭০৭)। এ ছাড়া শ্রীমঙ্গলের অন্যান্য হোটেল হলো হবিগঞ্জ সড়কে টি টাউন রেস্ট হাউস (০৮৬২৬-৭১০৬৫), কলেজ রোডে হোটেল পস্নাজা (০৮৬২৬-৭১৫২৫), হোটেল ইউনাইটেড, সবুজ বাংলা, মুক্ত, আল-রহমান, নীলিমা, মুন, সন্ধ্যা  ইত্যাদি।

ট্রেন বা বাস যা দিয়ে জান না কেন , নামার পর সামনে হাঁটুন অনেক হোটেল আসে ।
ডবল রুম ৪০০-৬০০ , , ৬-৮ জন হলে ১ টা বড় রুম নিতে পারেন হোটেল টি টাউন , হোটেল ইউনাইটেড ভাড়া ১১০০-১৩০০
পরিবারসহ গেলে হোটেল প্লাজা তে থাকে পারেন , ফোন ০১৭১১৩৯০০৩৯

7861_1  Kawser_Rhuso_1315248442_9-DSC02697

Kawser_Rhuso_1315246789_6-DSC08216  mahalderblog_1262196718_3-2

Kawser_Rhuso_1315247353_1-DSC02710  SAZID007007_1324047123_7-20

mahalderblog_1262198208_16-16  SAZID007007_1324047008_4-10

SAZID007007_1324047050_5-11  SAZID007007_1324047159_8-24a

SAZID007007_1324048710_10-27  index29

খৈয়াছড়া ঝর্ণা

খৈয়াছড়া ঝর্ণা

দেখে এলাম আল্লাহর অপূর্ব সৃষ্টি খৈয়াছড়া ঝর্ণা

২৪ অক্টোবর ২০১৪, ফার্মগেট, রামপুরা, খিলগাও আর সাইনবোর্ড থেকে সকাল ৫.৩০ ফজর সলাতের পর আমি (আবু যারীফ), হামিদুল হক, শাওন আর বিশ্বজিৎ দাদা মিলে প্রাইভেট কারে চেপে বসলাম। গন্তব্য খৈয়াছড়া ঝর্ণা, বারৈয়াঢালা জাতীয় উদ্যান, মিরসরাই, চট্টগ্রাম। যাওয়ার পথে ৯.৪৫-এ কুমিল্লা বিশ্বরোডের পাশে সকলের পরিচিত নুরজাহান হোটেলে সকালের নাস্তা সারলাম। সংক্ষিপ্ত বিরতির পর আবার যাত্রা শুরু হলো। কিন্তু রাস্তার দুরবস্থা আর রাস্তার একপার্শ্ব উন্নয়নের নামে বন্ধ থাকায় ডিভাইডার বিহীন দুরপাল্লার রাস্তায় কন্টেইনারবাহী যন্ত্রদানবের মুখোমুখী হওয়া থেকে বেঁচে গেছি কয়েকবার।

বেলা ১২.৩০ মিনিট নাগাদ প্রবেশ করলাম মিরসরাই উপজেলায়। রাস্তার পাশে গাড়ী থামিয়ে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় এগিয়ে চললাম বড় তাকিয়া’র উদ্দেশ্যে। কিছুদূর যাওয়ার পর ছোট্ট একটি সাইনবোর্ড চোখে পড়লো। এমন একটি সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকার পরিচিতিমূলক কোন বিশাল সাইনবোর্ড না থাকার সরকারী অব্যবস্থাপনায় দুঃখিত না হয়ে পারলাম না। প্রধান সড়কের বায়ে সরু রাস্তা ধরে ২ কিলোমিটার যাওয়ার পর রেললাইন দেখতে পেলাম। রেল লাইনের পাশেই কয়েকটি দোকান ও হোটেল আছে। এখানে মিনারেল ওয়াটার, কোল্ড ড্রিংক, কলা, বিস্কুট, ব্রেড, চা পাবেন। হোটেলে হালকা নাস্তা (পরটা, ডাল, ডিম ভাজি) খাওয়ার ব্যবস্থা আছে।

রেল লাইনের পরের রাস্তা ভালো না হওয়ায় গাড়ি রেল লাইনের পাশে রেখে ৫০ টাকায় অটোরিক্সা ভাড়া করে বাশের সাঁকো পর্যন্ত গেলাম। সাঁকোর নীচ দিয়েই বয়ে চলেছে ঝর্ণা হতে বয়ে আসা জলের ধারা। এরপর বাঁশের সাঁকো পার হয়ে ঝর্ণায় যাওয়ার মূল পথে হেটে চললাম। সাঁকোর ওপারে একটি সাইনবোর্ডে লিখা দেখলাম ওখান থেকে ঝর্ণার দূরত্ব ৪.২০ কিলোমিটার। যাক আমরা তিন জন দূরত্বের কথা চিন্তা না করলেও চিন্তা হলো হামিদুল হককে নিয়ে। তার আবার ব্যাক পেইনের প্রবলেম উচ্চ মাত্রায়। এরপর আবার স্যান্ডেলের পরিবর্তে পরে এসেছে চামড়ার স্যু। বললাম- চলুন, আল্লাহ্ ভরসা।

যাইহোক একপ্রকার মনের জোড়কেই সঙ্গী করে ৪জন এগিয়ে যাচ্ছি। পথিমধ্যে এক ছোট্ট মেয়েকে দেখা গেল শুকনো মরিচের ঝাল সহ আমলকী নিয়ে বসে আছে। উদ্দেশ্য ভ্রমন পিয়াসীদের নিকট তা বিক্রি করা। আমি ওর অনুমতি নিয়ে টুক করে একটি ছবি তুলে নিলাম। কিছুক্ষণ এগিয়ে গিয়ে একটি নির্মানাধীন মাসজিদ চোখে পড়লো। মাসজিদের সামনে রাস্তা ধরে একটু সামনে আমরা এগিয়ে গিয়েই দেখতে পেলাম একটি হোটেল নাম “ঝর্ণা হোটেল”। কাঁচা হাতে লেখা সাইনবোর্ড পড়ে জানা গেল এখানে ভাত, মাছ, মাংশ, ডিম সবজি সব পাওয়া যায় তবে অগ্রিম অর্থের মাধ্যমে অর্ডার দিয়ে যেতে হবে। আরো কিছুদূর যাওয়ার পর ঝর্ণার পানির কলকল ধ্বনি ভেসে আসলো।

কিছুদূর নেমেই দেখা মিলল ঝর্ণা ধারার। তাতে হাত-মুখ ধুয়ে ফ্রেস হয়ে আবার চলতে লাগলাম। পিচ্ছিল পাথুরে পথ ধরে এগিয়ে চলছি তো চলছিই। অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে ঘন্টা খানিক পর ঝর্ণার মূল সৌন্দর্য ধাপে পৌঁছলাম। শুনেছি এই ঝর্ণার নাকি ৯টি ধাপ। আমি জানিনা আসলে এটা কততম ধাপ। অপূর্ব ভঙ্গিমায় পানি পাহাড়ের পাথুরে গা বেয়ে নেমে আসছে। সাথে সাথে একটি গীতিকবিতা মনে পড়ে গেল- পাহাড়ের কান্না দেখে তোমরা তাকে ঝর্ণা বলো…।
এই ধাপে এসে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলাম। এরপর সিদ্ধান্ত নিলাম আরো উপরের ধাপে যাওয়ার; কিন্তু বিশ্বজিৎ দাদা আর হামিদুল হক সাহস না পাওয়ায় আমি আর শাওন সিদ্ধান্ত নিলাম উপরের ধাপে ওঠার। অতঃপর পোশাক চেঞ্জ করে ঝর্ণার পাশেই স্থানীয় এক দোকানীর জিম্মায় ৫০টাকা ভাড়ায় কাপড়ের ব্যাগ আর স্যান্ডেল রাখলাম। তারপর টিভিতে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিতে দেখা হিরোদের মতো রশি ধরে খাড়া পাহাড়ের গা বেয়ে উপরে উঠতে লাগলাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই শরীরের এনার্জী শেষ হয়ে আসলো (যদিও ইতিমধ্যে কমলার জুস আর গুক্লোজ মেলানো ২ লিটার শরবত গলধঃকরণ হয়ে গেছে)। আমি আর চলতে পারছিলাম না। শাওনকে বললাম তুমি যাও, আমি আসছি। আমি আর বসে থাকতে না পেরে মাটিতে গা এলিয়ে দিলাম।
পাহাড়ের শিতল মাটির পরশে ক্লান্তি অনেকটা দূর হয়ে গেল। উঠে বসলাম নবো উদ্যমে। অতঃপর উঠে আবার খাড়া পাহাড়ের গা বেয়ে নীচে নেমে এলাম। কিছুদুর যাবার পর ঝর্ণার পরবর্তী ধাপ চোখে পড়লো। এই ধাপে পৌঁছে ঝর্ণার জলে গা ভেজানোর লোভ আর সামলাতে পারলাম না। ২০মিনিট ভেজার পর উপরের ধাপে উঠলাম কিন্তু এ ধাপটি অত সুন্দর নয়। এরপরও নাকি আরও কয়েকটি ধাপ আছে। শারিরীক ক্লান্তি না থাকলেও সাহসে কুলোচ্ছিল বলে আর উপরের ধাপে গেলাম না। ৩/৪ জনকে দেখলাম উপরের ধাপ থেকে ফিরে আসছে। জিজ্ঞেস করে জানলাম উপরের ধাপগুলো নাকি আরও সুন্দর। যাই হোক আগামী কোন এক ট্যুরে যাবার আকাঙ্খা রেখে নীচের ধাপে নামা শুরু করলাম।

যারা এ ঝর্ণা দেখতে আসেননি তারা হয়তো বুঝতেই পারবেন না যে, পাহাড়ে উঠা যেমন কঠিন নামা তার চেয়েও বেশী কঠিন। আমরা আবার নেমে আসলাম যেকানে কাপড়-চোপড়ের ব্যাগ রেখেছিলাম সেই ধাপে। এখানে পানি একটু বেশী হওয়ায় ঝর্ণার জলে সাতার কাটলাম। ৩০ মিনিট পর উঠে দোকানীর কাছ থেকে পাহাড়ী কলা আর আমড়া খেলাম। একটা কোল্ড ড্রিংকসও খেলাম। দাম দু-চার টাকা বেশী নিলেও সুন্তুষ্ট হওয়ার পরিবর্তে দোকানীকে ধন্যবাদ না দিয়ে পারা যায় না, কারণ এত উপরে কষ্ট করে বয়ে এনেছে এটাইতো যথেষ্ট। তারপর গা মুছে জামা-কাপড় চেঞ্জ করে রওনা দিলাম রেল লাইনের দিকে।

কিছুক্ষণ হাঁটছি আর স্মৃতি হিসেবে ছবি তুলছি। একটু সমতলে আসার পর দেখি বেড়াতে আসা এক গ্রুপ জেনারেটর ভাড়া করে সাউন্ড বক্স রেডি করেছে রাতে পার্টি করবে বলে। ওদের সাথে কিছুক্ষণ মজা করে উঠে আসলাম আসরের সময় হয়ে গেছে বলে। আমাদের আসতে দেখে আযান দিয়ে দিল একটি ৮/১০ বছরের ছোট ছেলে। আমরা মাসজিদে প্রবেশ করলাম। আমাদের তাড়া দেখে ইমাম সাহেব সালঅত আরম্ভ করে দিলেন। আসরের সালাতের পর আমরা কিছুদূর হেঁটে পূর্বের সাঁকো পার হয়ে এবার ৬০টাকায় অটোরিক্সা ভাড়া করে ছুটলাম রেল লাইনের দিকে। ১০মিনিটেই পৌঁছে গেলাম রেল লাইনের ধারে।

অটোরিক্সা থেকে নেমে শাওন, হামিদুল হক আর বিশ্বজিৎ দাদা হোটেলে ঢুকে পরটা, ডিমভাজি আর ডাল দিয়ে দুপুরের খাওয়া সারলো। আমি পাহাড়ী কচি শশা, ছোলা ভুনা আর ফিজআপ খেলাম। ৩০মিনিট পর আবার গাড়িতে চেপে ফিরে চললাম আপন আলয় ঢাকার উদ্দেশ্যে। চলে যাচ্ছি তবে একবারে যাচ্ছি না। ভবিষ্যতে আবার সাহস সঞ্চয় করে ফিরে আসব খৈয়াছড়ার চূড়া জয় করার জন্য ইনশা-আল্লাহ। আল্লাহ্ হাফিজ।

20141024_162038  24102014028  

24102014033  24102014044

24102014050  24102014054

24102014058  24102014060

24102014066  24102014067

24102014078  24102014079

24102014081  ipp

24102014112  24102014113  

24102014196  24102014198

ipp  ipp

24102014100  24102014118

24102014098  24102014183

ঝর্ণার ভিডিও লিংক ও ছবি:

https://www.youtube.com/watch?v=XbT5M7dDy8w

সাজেক ভ্যালী

সাজেক ভ্যালী- চলুন ঘুরে আসি বাংলার দ্বিতীয় দার্জিলিং

সাম্প্রতিক সময়ে ভ্রমণ পিপাসু মানুষদের কাছে যে কয়টি ভ্রমণ গন্তব্য সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তার মধ্যে অন্যতম হল রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত সাজেক ভ্যালী। তাই আমরা আপনাদের ভ্রমণের সুবিধার্থে নিয়ে এলাম সাজেক ভ্রমণের বিস্তারিত পোষ্ট।

দার্জিলিং এর প্রতিচ্ছবি রাঙামাটির’র সাজেক ভ্যালী। বাংলাদেশ ও ভারতের মিজোরাম সীমান্তের কূল ঘেঁষা অপার সম্ভাবনার জনপদ সাজেক ভ্যালীতে বসে নিজেকে উজাড় করে দিয়ে প্রকৃতির খুব কাছাকাছি থেকে এক খণ্ড সময় কাটায় প্রকৃতি প্রেমিকরা। তাদের হৃদয় ও মন ছুঁয়ে যায় নৈসর্গিক এ স্থানটির রূপ-লাবণ্যে। মেঘাচ্ছন্ন দিনে সাজেক আরো বেশী দৃষ্টিনন্দন ও অপরূপ হয়ে উঠে। সাজেকের সৌন্দর্য্যতা ভ্রমণ পিপাসু যে কাউকেই মুগ্ধ করবে অনায়াশে।

সমতল ভূমি থেকে প্রায় ৩ হাজার ফুট উঁচু পাহাড়ের চুড়ায় অবস্থিত সাজেক। এ পাহাড়ের চুড়া থেকে মিজোরামের লুসাই পাহাড়ের অপূর্ব দৃশ্য দেখে বিস্ময়ে বিমুঢ় হয়ে পড়বে যে কোন আগন্তুক। নাগরিক জীবনের সকল ক্লান্তির অবসানে চলে আসুন সাজেক ভ্যালীতে।

এখানকার প্রকৃতি ক্ষণে ক্ষণে রং বদলায়। সকাল, দুপুর, বিকেল, সন্ধ্যা ও রাতে বসে রঙের মেলা। সাজেক ভ্যালিতে উঠেই আকাশপানে তাকালে মনে হয় কালো মেঘগুলোকে যেন সরিয়ে দিয়ে সাদা মেঘের আনা গোনা শুরু হয়েছে। পাহাড় ঘেরা এ প্রাকৃতিতে বসে চাঁদনী রাতের দৃশ্যপট এনে দেয় ভিন্ন মাত্রা। সাজেকের আবহাওয়া ও সৌন্দর্য, রাতের আকাশে চন্দ্র-তারা ও দিনের আলোয় লাল সূর্য মিলেমিশে একাকার। এ দৃশ্য নিমিষেই সবার মনকে উদাস করে তোলে। সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হওয়ার পর থেকে সাজেকের সৌন্দর্য্য অবলোকনে প্রতিদিন প্রচুর পর্যটক ভীড় জমাচ্ছে রুইলুই ভ্যালিতে।

দেশের সর্ব বৃহৎ ইউনিয়ন সাজেক। আয়তন ৬০৭ বর্গ মাইল। যা দেশের কোনো কোনো জেলার চেয়েও বড়। এখানকার লোক সংখ্যা মাত্র হাজার দশেক। দীঘিনালা থেকে সাজেক যেতে সময় লাগে মাত্র দেড় থেকে দু’ঘন্টা। পথিমধ্যে চোখে পড়বে ঢেউ খেলানো অসংখ্য উঁচু-নিচু ঢেউ তোলা সবুজ পাহাড়। পাহাড়ের বুক চিরে আপন মনে বয়ে চলেছে কাচালং ও মাচালংসহ নাম না জানা অসংখ্য নদ-নদী। নদীতে ভাসছে বাঁশের চালি। যা কাপ্তাই লেক হয়ে কর্ণফুলী পেপার মিলে যাবে।

রাস্তার দু’ধারে-চোখে পড়বে উপজাতীয়দের বসত বাড়ী, মাচাং ঘর ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী জাতিসত্তার বিচিত্রময় জীবন ধারাসহ আরো কত কি! চড়াই উতরাই পেরিয়ে আপনি যখন রুইলুই এ পৌঁছাবেন ততক্ষণে আপনি সাজেক ভ্যালীতে পৌছে যাবেন। সাজেকে প্রবেশের সাথে সাথে আপনার চারপাশ যেন মুর্হুতে পরিবর্তন হয়ে যাবে।

এক সময় সাজেক যাওয়াটা স্বপ্ন ছিল। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর’র সুবাদে গত কয়েক বছর আগে সাজেক পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। এতে করে বদলে যেতে শুরু করেছে সাজেকবাসীর জীবন চিত্র। সৌন্দর্যের টানে বহু পর্যটক এখন সাজেক আসছেন।

প্রকৃতির সাথে মিতালি করতে এসে পর্যটকরা যাতে আরো স্বাচ্ছন্দ্যে কাটাতে পারে সে বিষয়টি মাথায় রেখে সম্প্রতি সেনাবাহিনী পর্যটনের নানা অবকাঠামো গড়ে তোলার কাজ শুরু করে। সুদৃশ্য সড়ক, কটেজ, বিশ্রামাগার, সড়কবাতি, ক্লাবঘর, শিব মন্দির, পাবলিক টয়লেট, বিদেশি ঘরের আদলে তৈরি রিসোর্ট “রুম্ময়”ও থ্রি স্টার মানের হোটেলও এ পাহাড়ে তৈরি করা হয়েছে। সাজেকের বাসিন্দাদের অধিকাংশই ভারতে মিজো এবং বাংলাদেশের লুসাই বা পাংখোয়া নামে পরিচিত।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী সাজেক সফরে এসে মুগ্ধ হয়ে এ স্থানটিকে আরো বেশী দৃষ্টিনন্দন ও সর্বসাধারণের জন্য সহজতর করতে গ্রহণ করেছেন নতুন প্যাকেজ। রাষ্ট্র প্রধানদের সে প্যাকেজ’কে বাস্তবে রূপ দিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চট্টগ্রামস্থ ২৪ পদাতিক ডিভিশনের সদস্যরা।

এছাড়াও রুইলুই ভ্যালিতে পর্যটকদের অবকাশ যাপনের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আলো রিসোর্ট এর শুভ উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ি জেলার রিজিয়ন কমান্ডার কাজী শামছুল ইসলাম। এসময় উপস্থিত ছিলেন আলো এনজিওর নির্বাহী পরিচালক অরুন কান্তি চাকমা, বাঘাইহাট জোনের জোন কমান্ডার লেঃ কর্নেল রসিদুল ইসলাম, দিঘীনালা জোনের জোন কমান্ডার লেঃ কর্নেল লোকমান হোসেন, ৩৯ বিজিবি মারিশ্যা জোনের জোন কমান্ডার লেঃ কর্নেল রবিউল ইসলাম প্রমুখ।

পর্যটকরা জানান, পর্যটকদের জন্য সাজেক একটি সম্ভাবনাময় স্পট। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যকে কাজে লাগাতে পারলে সাজেক হতে পারে দেশের পর্যটন শিল্পের মধ্যে অন্যতম। সেই সাথে পাল্টে যাবে দেশের অর্থনৈতিক চেহারা।

সাজেকের কংলাক পাড়ার হেডম্যান চংমিং থাং লুসাই জানান, সেনাবাহিনীর উদ্যোগে সাজেক পর্যন্ত রাস্তা হওয়ায় এলাকার চিত্র পাল্টে যেতে শুরু করেছে। তবে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকার কারনে আজ থেকে ৭ বছর আগেও সাজেকের মানুষ জীবন ও জীবিকার জন্য পাড়ি জমাতো পাশ্ববর্তী মিজোরামে। তাদের লেখাপড়া, বাজারঘাট, আত্মীয়তা তথা দৈনন্দিন জীবনযাপন ছিল মিজোরাম নির্ভর। এখন সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হওয়ায় মাত্র ৩ ঘন্টায় খাগড়াছড়ি যাতায়াত করা যায়।

প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য্যের এক অনন্য আঁধার আমাদের মাতৃভূমি রূপসী বাংলা । আমরা বিভিন্ন দেশের গ্রীন ভ্যালী দেখতে যাই বা দেখার স্বপ্ন দেখি। কিন্তু আমাদের দেশেও আছে তেমনই এক অপরূপা গ্রীন ভ্যালী, যার নাম সাজেক। ঢাকা থেকে মাত্র ৭/৮ ঘণ্টা দূরত্বে পার্বত্য অঞ্চলের রাঙামাটি জেলার সাজেক ভ্যালী অবস্থান। হাতে দুই দিন সময় নিয়ে বেড়িয়ে পড়ুন এ সৌন্দর্য অবলোকন করার জন্য, যা আপনার কল্পনায় গেঁথে থাকবে অনেক অনেক দিন।

সাজেক রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলায় অবস্থিত । সাজেক হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন । যার আয়তন ৭০২ বর্গমাইল । সাজেকের উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা , দক্ষিনে রাঙামাটির লংগদু , পূর্বে ভারতের মিজোরাম , পশ্চিমে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা । সাজেক রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও এর যাতায়াত সুবিধা খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে । রাঙামাটি থেকে নৌপথে কাপ্তাই হয়ে এসে অনেক পথ হেঁটে সাজেক আসা যায় । খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে এর দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার । আর দীঘিনালা থেকে ৪৯ কিলোমিটার । বাঘাইহাট থেকে ৩৪ কিলোমিটার ।

খাগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালা আর্মি ক্যাম্প হয়ে সাজেক যেতে হয় । পরে পরবে ১০ নং বাঘাইহাট পুলিশ ও আর্মি ক্যাম্প । যেখান থেকে আপনাকে সাজেক যাবার মূল অনুমতি নিতে হবে । তারপর কাসালং ব্রিজ, ২টি নদী মিলে কাসালং নদী হয়েছে । পরে টাইগার টিলা আর্মি পোস্ট ও মাসালং বাজার । বাজার পার হলে পরবে সাজেকের প্রথম গ্রাম রুইলুই পাড়া যার উচ্চতা ১৮০০ ফুট । এর প্রবীণ জনগোষ্ঠী লুসাই । এছাড়া পাংকুয়া ও ত্রিপুরারাও বাস করে । ১৮৮৫ সালে এই পাড়া প্রতিষ্ঠিত হয় । এর হেড ম্যান লাল থাংগা লুসাই । রুইলুই পাড়া থেকে অল্প সময়ে পৌঁছে যাবেন সাজেক । সাজেকের বিজিবি ক্যাম্প বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিজিবি ক্যাম্প । এখানে হেলিপ্যাড আছে । সাজেকের শেষ গ্রাম কংলক পাড়া। এটিও লুসাই জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত পাড়া । এর হেড ম্যান চৌমিংথাই লুসাই । কংলক পাড়া থেকে ভারতের লুসাই পাহাড় দেখা যায় । যেখান থেকে কর্ণফুলী নদী উৎপন্ন হয়েছে । সাজেক বিজিবি ক্যাম্প এর পর আর কোন ক্যাম্প না থাকায় নিরাপত্তা জনিত কারনে কংলক পাড়ায় মাঝে মাঝে যাওয়ার অনুমতি দেয় না । ফেরার সময় হাজাছড়া ঝর্ণা , দীঘিনালা ঝুলন্ত ব্রিজ ও দীঘিনালা বনবিহার দেখে আসতে পারেন । একদিনে এই সব গুলো দেখতে হলে যত তারাতারি সম্ভব বেড়িয়ে পড়বেন ।

খাগড়াছড়ির সিস্টেম রেস্তোরায় ঐতিহ্যবাহী খাবার খেতে ভুলবেন না ।খাগড়াছড়ি থেকে জীপগাড়ি (লোকাল নাম চাঁন্দের গাড়ি) রিজার্ভ নিয়ে একদিনে সাজেক ভ্যালী ঘুরে আসতে পারবেন । ভাড়া নিবে ৫০০০-৬০০০ টাকা । এক গাড়িতে ১৫ জন বসতে পারবেন । লোক কম হলে শহর থেকে সিএনজি নিয়েও যেতে পারবেন । ভাড়া ৩০০০ টাকার মতো নিবে । অথবা খাগড়াছড়ি শহর থেকে দীঘিনালা গিয়ে সাজেক যেতে পারবেন । বাসে দীঘিনালা জন প্রতি ৪৫ টাকা এবং মোটর সাইকেলে জন প্রতি ভাড়া ১০০ টাকা । দীঘিনালা থেকে ১০০০-১২০০ টাকায় মোটর সাইকেল রিজার্ভ নিয়েও সাজেক ঘুরে আসতে পারবেন । ফেরার সময় অবশ্যই সন্ধ্যার আগে আপনাকে বাঘাইহাট আর্মি ক্যাম্প পার হতে হবে । তা না হলে অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে । ক্যাম্পের ছবি তোলা নিষেধ এই বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখবেন ।

সিস্টেম রেস্তোরাঃ
খাগড়াছড়ি শহরের কাছেই পানখাই পাড়ায় এই ঐতিহ্যবাহী খাবারের রেস্তোরার অবস্থান । এখানে খাগড়াছড়ির ঐতিহ্যবাহী খাবার খেতে পারবেন । যোগাযোগঃ ০৩৭১-৬২৬৩৪ , ০১৫৫৬৭৭৩৪৯৩ , ০১৭৩২৯০৬৩২২ ।

যেভাবে যাবেন:

সাজেক যেতে হলে সর্বপ্রথম আসতে হবে খাগড়াছড়িতে। ঢাকার কমলাপুর, সায়দাবাদ, কলাবাগান ও ফকিরাপুল থেকে খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে বাস ছেড়ে আসে। চট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড় থেকে খাগড়াছড়ির বাস পাওয়া যায়। খাগড়াছড়ি থেকে জীপ গাড়ী, মাইক্রোবাস ও মোটর সাইকেলে চড়ে যেতে পারেন সাজেক।

ঢাকা থেকে শ্যামলী , হানিফ ও অন্যান্য পরিবহনের বাসে খাগড়াছড়ি যেতে পারবেন । ভাড়া নিবে ৫২০ টাকা । শান্তি পরিবহনের বাস দীঘিনালা যায় । ভাড়া ৫৮০ টাকা । এছাড়া BRTC ও সেন্টমার্টিন্স পরিবহনের এসি বাস খাগড়াছড়ি যায় । যোগাযোগঃ সেন্টমার্টিন্স পরিবহন – আরামবাগঃ ০১৭৬২৬৯১৩৪১ , ০১৭৬২৬৯১৩৪০ । খাগড়াছড়িঃ ০১৭৬২৬৯১৩৫৮ ।শ্যামলী পরিবহন – আরামবাগঃ ০২-৭১৯৪২৯১ । কল্যাণপুরঃ ৯০০৩৩৩১ , ৮০৩৪২৭৫ । আসাদগেটঃ ৮১২৪৮৮১ , ৯১২৪৫৪ । দামপাড়া (চট্টগ্রাম)ঃ ০১৭১১৩৭১৪০৫ , ০১৭১১৩৭৭২৪৯ । শান্তি পরিবহন- আরামবাগ ( ঢাকা ) – ০১১৯০৯৯৪০০৭ । অক্সিজেন(চট্টগ্রাম) ০১৮১৭৭১৫৫৫২ । চট্টগ্রাম থেকেও খাগড়াছড়ি যেতে পারবেন । BRTC এসি বাস কদমতলী(চট্টগ্রাম): ০১৬৮২৩৮৫১২৫ । খাগড়াছড়িঃ ০১৫৫৭৪০২৫০৭ ।

যেথায় থাকবেন:

একসময় সাজেকে গিয়ে রাত্রি যাপন করা অসম্ভব ব্যাপার হলেও এখন সাজেকে রয়েছে একাধিক কটেজ ও রিসোর্ট। পর্যটকদের সুবিধার্থে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে সাজেকে চলছে নানান অবকাঠামো তৈরীর কাজ। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভ্রমণ পিপাসুরা ছুটে আসছে মায়াভরা সাজেকের সৌন্দর্য্য অবলোকনে। দার্জিলিং এর সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ায় পর্যটকরা সাজেকের নাম দিয়েছেন বাংলার দার্জিলিং।

#) খাগড়াছড়িঃ
পর্যটন মোটেলঃ
এটি শহরে ঢুকতেই চেঙ্গী নদী পার হলেই পরবে । মোটেলের সব কক্ষই ২ বিছানার । ভাড়াঃ এসি ২১০০ টাকা, নন এসি ১৩০০ টাকা । মোটেলের অভ্যন্তরে মাটিতে বাংলাদেশের মানচিত্র বানানো আছে । যোগাযোগঃ ০৩৭১-৬২০৮৪৮৫ ।

হোটেল ইকো ছড়ি ইনঃ
খাগড়াপুর ক্যান্টর্মেন্ট এর পাশে পাহাড়ী পরিবেশে অবস্থিত । এটি রিসোর্ট টাইপের হোটেল । যোগাযোগঃ ০৩৭১-৬২৬২৫ , ৩৭৪৩২২৫ ।

হোটেল শৈল সুবর্নঃ ০৩৭১-৬১৪৩৬ , ০১১৯০৭৭৬৮১২ ।
হোটেল জেরিনঃ ০৩৭১-৬১০৭১ ।
হোটেল লবিয়তঃ ০৩৭১-৬১২২০ , ০১৫৫৬৫৭৫৭৪৬ , ০১১৯৯২৪৪৭৩০ ।
হোটেল শিল্পীঃ ০৩৭১-৬১৭৯৫ ।

দীঘিনালাঃ
দীঘিনালা গেস্ট হাউজঃ এটি দীঘিনালা শহরের বাস স্ট্যান্ডের উল্টো পাশে অবস্থিত । এটি দীঘিনালার আবাসিক হোটেল গুলোর মধ্যে একটু মানসম্মত । এখানে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে রুম নিয়ে থাকা যাবে । নূর মোহাম্মদ(ম্যানেজার) – ০১৮২৭৪৬৮৩৭৭।

15_131650

10713015_321227201403432_8106758616239366236_n  IMG_20140828_140601

sajek-1417000737

shahed5555_128422036754cdc349954630.73591416_xlarge

পাহাড়ী কন্যা বান্দরবান ৮

পাহাড়ী কন্যা বান্দরবান: দর্শনীয় স্থানসমূহের সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও ছবি-৮

নাফাখুম জলপ্রপাত (বাংলাদেশের নায়াগ্রা)

বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার রেমাক্রি একটি মারমা অধ্যুসিত এলাকা। মারমা ভাষায় ‘খুম’ মানে হচ্ছে জলপ্রপাত।
রেমাক্রি থেকে তিন ঘন্টার হাঁটা পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হয় আশ্চর্য সুন্দর সেই জলপ্রপাতে, যার নাম ’নাফাখুম’। ২৫-৩০ ফুট নিচে পতিত হয়ে প্রকৃতির খেয়ালে সৃষ্টি হয়েছে চমৎকার এক জলপ্রপাত! সূর্যের আলোয় যেখানে নিত্য খেলা করে বর্ণিল রংধনু! আকাশে তৈরি হয় হাজার রঙের আলোকচ্ছটা। মেঘের আড়ালে যখন সূর্য হাসে আলোর সে হাসির ঝিলিক ছড়িয়ে পড়ে পুরো পাহাড়তলে। খরস্রোত নদীর জল সাই সাই করে ধেয়ে যায় কলকল শব্দে। ভয়ংকর সে নদীর সৌন্দর্য যেন আরো ভয়ংকর। যারা বিদেশের মাটিতে সুন্দরকে খুজে বেড়ান তাদের জন্য নাফাখুম চ্যালেঞ্জ ছাড়া আর কিছুই নয়। এ দেশে এমন সুন্দর থাকতে পারে তা বিশ্বাস করাই মুশকিল। পাহাড়, নদী আর পাথুরে খাল দেখে মনে হবে যেন কোন এক ছবির পাতায় পাতায় হাটছি। অসাধারন সুন্দর, অসহ্য সুন্দর। পানির গমগম করে ঝড়ে পরার শব্দে চারদিক মুখরিত। বর্ষার সময় ঝর্নার আকার বড় হয়। আর শীতের দিনে তা ক্ষীন হয়ে যায়। তবে সেপ্টেম্বর অক্টোবর মাসে নাফাখুমের প্রকৃত সৌন্দর্য দেখা যায়। উপর হতে আছড়ে পড়া পানির আঘাতে ঝর্নার চারিদিকে সৃষ্টি হয় ঘন কুয়াশার। উড়ে যাওয়া জলকনা বাষ্পের সাথে ভেসে ভেসে শরীরে এসে পড়ে। রোমাঞ্চকর সে অনুভূতি। একে বাংলার নায়াগ্রা বললে ভূল বলা হবে না। দুপাশের সবুজ পাহাড়ী বন আর পাথুরে ভুমি নাফাখুম ঝর্নাকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা, করেছে আরো আকর্ষনীয়। পাথরের ফাকে ফাকে ছোপ ছোপ সবুজ ঘাসের থোকা সৌন্দর্যের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েকগুন।

বান্দরবন হতে ৭৯ কিমি. দুরে অবস্থিত থানচি। এটি একটি উপজেলা। সাঙ্গু নদীর পাড়ে অবস্থিত থানচি বাজার। এই সাঙ্গু নদী ধরে রেমাক্রীর দিকে ধীরে ধীরে উপরে উঠতে হয় নৌকা বেঁয়ে। উপরে উঠা বলছি এই কারনে যে আসলেই নদীটা রেমাক্রী হতে থানচির দিকে ধীরে ধীরে ঢালু হয়ে এসেছে আর এই কারনে এখানে এত স্রোত। নদী কিছুদূর পর পর ১-২ ফুট এমন কি কোথাও কোথাও ৪/৫ ফুট পর্যন্ত ঢালু হয়ে নিচে নেমেছে। প্রকৃতি এখানে এত সুন্দর আর নির্মল হতে পারে ভাবাই যায় না। নদীর দুপাশে উচু উচু পাহাড়। সবুজে মোড়ানো প্রতিটি পাহাড় যেন মেঘের কোলে শুয়ে আছে অবলিলায়। কোন কোন পাহাড় এতই উচু যে তার চূড়া ঢেকে আছে মেঘের আস্তরে। অসাধারন সে দৃশ্য। সবুজে ঘেরা সে পাহাড়ে হঠাৎ হঠাৎ দেখা যায় দু একটি উপজাতী বসতঘর। পাহাড়ের ঢালুতে টিন আর বেড়ার ঘর গুলো দেখে মনে হবে যেন সাজিয়ে গুছিয়ে রাখা কোন বিদেশী পর্যটন কেন্দ্র। কড়া সবুজের মাঝে মাটি রং এর ঘর গুলো যেন ক্যানভাসে আঁকা কোন ছবি। বিমূর্ত সে ছবি, অপার তার সৌন্দর্য। চারদিক সুনসান, নিরব, নিশব্দ কেবলই পানির হুমহুম শব্দ আর পাখির কিচির মিচির।

এখানে নদীগুলোর গভীরতা একেবারেই কম। কোথাও কোথাও পানির তলার পাথর দেখা যায়। কোথাও বা নদীর মাঝেই উচু হয়ে আছে পাথর। কিন্তু গভীরতা কম হলে কি হবে মারাত্মক স্রোত। একটু উনিশ বিশ হলেই সর্বনাশ। যেখানে নদী ঢালু হয়ে গেছে সেখানে প্রচন্ড স্রোত। গমগম করে নেমে যাচ্ছে পানির ঢল। এমন জায়গায় নৌকা প্রায় চলতেই পারে না। তাই নেমে হেটে যেতে হয়। যাত্রা পথে এমন ভাবে বেশ কয়েকবারই নেমে নেমে হেটে যেতে হয়। শীতকালে নদীতে পানি কম থাকে বলে এই উঠা নামার পরিমানটা অনেকবেশী থাকে। এই পথে যেতে যেতে আপনাকে পারি দিতে হবে তিন্দু ও বড় পাথর। তিন্দুতে একটি বিজিবি ক্যাম্প আছে। অসাধারন সুন্দর একটি স্থান তিন্দু। অনেকে নাফাখুম যাবার পথে থানচি না থেকে তিন্দুতে এসে রাত্রিযাপন করে। এখানে থাকার জন্য কিছু ঘর ভাড়া পাওয়া যায়।
তিন্দু হতে একটু সামনে এগিয়ে গেলেই বড় পাথর। স্থানীয়রা একে রাজা পাথরও বলে থাকে এবং তারা বিশ্বাস করে যে এই রাজা পাথরকে সম্মান দেখাতে হয়, নতুবা দুর্ঘটনা ঘটে। এ কারনে এখানে এসে নিশ্চিত নেমে হেটে যেতে হয়। আসলে একটি বিশাল আকারের পাথর। পাশে আরো অনেকগুলো ছোট বড় পাথর নদীর ঠিক মাঝে পড়ে আছে। ধারনা করা হয় বহু বছর আগে ভুমিকম্পের কারনে পাশের পাহাড় হতে এই বিশাল আকারের পাথরের টুকরো গুলো নদীর মাঝে এসে পড়েছে। আর এ কারনে নদীর মুখ খুব ছোট হয়ে গেছে যার ফলে এখানে প্রবল স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে।

বড় পাথর হতে ঘন্টা খানেক সামনে এগিয়ে গেলেই রেমাক্রী বাজার। বলতে দ্বিধা নেই যে এই নদী ভ্রমনটা না থাকলে কেবল নাফাখুম দর্শনটা একেবারেই পানসে হয়ে যেতো। নদী পাহাড় আর আকাশের এমন সমন্বয় পৃথিবীর আর কোথাও আছে বলে মনে হয় না। রেমাক্রী বাজারের ঠিক কয়েকশ গজ আগে ছোট একটা খুম (ঝর্না) আছে। নাম রেমাক্রীখুম। এক কথায় অসাধারন। নাফাখুমের পানি রেমাক্রী খাল দিয়ে এসে এখানে সাঙ্গু নদীতে পরেছে। প্রায় ৪/৫ ফুট উচু হতে ধাপে ধাপে পানি সাঙ্গু নদীতে পরছে। দুচোখ জুড়িয়ে যাবার মত দৃশ্য। প্রচন্ড স্রোতে পানি গমগম শব্দ করে নিচে পরছে। দেখে মনে হবে যেন ক্যানভাসে আঁকা ছবি। এক একটি দৃশ্য চোখে পরবে আর গর্বে বুকটা ভরে যাবে। মনে হবে এই আমার বাংলাদেশ, এই আমার মা। সৃষ্টিকর্তা এখানে দুহাতে সুন্দরকে ঢেলে দিয়েছেন, যেখানে পা ফেলা যায় সেখানই সুন্দর। এ যেন সুন্দরের আবাসস্থল।
রেমাক্রী বাজারটা খুবই ছোট। বাজারের মাঝখানে বিশাল একটা উঠান আর চারদিকে দোকান। এগুলো তাদের ঘরও বটে। পেছনে থাকার ব্যবস্থা আর সামনে দোকান। বাজারের পাশে একটা রেষ্টহাউজ আছে। আর তার পাশেই বিজিবি ক্যাম্প। রেমাক্রী বাজার হতে নদীর কুল ধরে প্রায় ২/৩ ঘন্টা হাটতে হয় নাফাখুম যেতে। নদীর পাড়টা সমতল কিন্তু পাথুরে এবং বালুকাময়। কিন্তু এর কোন কিছুই আর চোখে পড়বে না। দুচোখ কেবল চারিপাশের সুন্দর দেখতে দেখতে বিহ্বল হয়ে যাবে। এখানে জনবসতী একেবারেই কম। মাঝে মাঝে দু একজন উপজাতীদেরকে মাছ ধরতে দেখা যায়। এই পথে যেতে ৩ বার বুক সমান গভীর নদী পার হতে হয়। দেখতে শান্ত পানি হলে কি হবে? ভয়ংকর স্রোত সে পানিতে। পা স্থির রাখা যায় না। জায়গামত পা ফেলতে না পারলে ভেসে যেতে হবে।

বিচিত্র সব অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে এই যাত্রা পথের প্রতি মুহুর্তে। নদীর পাড় কখনো উচু নিচু পথ, পাহাড়ের কিনারা বেয়ে সামনে এগোনো, কখনো আবার টারজানের মত লতা ধরে ঝুলে ঝুলে নদী পার হওয়া, রিতিমত রোমাঞ্চরক ভ্রমন। পথে যেতে যেতে কমপক্ষে ১০/১২ টা ছোট খাটো ঝর্না চোখে পরবে যার পানি গিয়ে রেমাক্রী খালে পতিত হয়েছে। দীর্ঘ পথ হেটে ক্লান্ত শরীর বা পা সে পানিতে ভেজানোর সাথে সাথে সব ক্লান্তি দুর হয়ে যাবে নিমিষেই। এ যেন এক প্রাকৃতিক জল থেরাপি। নদীর কিনারা ধরে ধরে যখন হাটু পানি বা কোমর পানি দিয়ে এগিয়ে যাবার সময় মনে হবে যেন আমাজন নদী পারি দিচ্ছি কিংবা আনাকোন্ডা সিনেমার দৃশ্যে অভিনয় করছি, এই বুঝি আনাকোন্ডা এসে খপ করে ধরে ফেল্লো। দারুন সব অনুভুতি। আপনি পুলকিত না হয়ে পারবেন না।

যেভাবে যেতে হবে
নাফাখুম যাবার জন্য একটিই পথ আপনার জন্য খোলা আছ। প্রথমেই আপনাকে যে কোন স্থান হতে গিয়ে পৌছতে হবে বান্দরবন। বান্দরবন হতে যেতে হবে থানচি। ২ ভাবে যেতে পারেন থানচি। বান্দরবন হতে চান্দের গাড়ী অথবা জীপ গাড়ী ভাড়া করে যেতে পারেন থানচি কিংবা বান্দরবন হতে সরাসরি পাবলিক বাসে করেও যেতে পারেন। পাবলিক বাসের ভাড়া কম কিন্তু বিরক্তকর ভ্রমন উপরন্তু আশে পাশের দৃশ্যাবলী খুব একটা উপভোগ করা যায় না। কিন্তু চান্দেরগাড়ী বা জীপ ভাড়া করে গেলে সে সমস্যা আর থাকবে না। তবে চান্দের গাড়ীর একটি সমস্যা আছে। বর্তমানে (সাময়িক সময়ের জন্য) বান্দরবন-থানচি রুটে ভরতপাড়া স্থানে রাস্তা ভাঙ্গা। বিজিবি কোন প্রকার গাড়ী চলাচল করতে দেয় না এই পথে। তাই আপনাকে চান্দেরগাড়ী ত্যাগ করে ওপার গিয়ে পাবলিক বাসে করে যেতে হবে থানচি। ভরতপাড়া হতে থানচির দুরত্ব ২৪ কিমি.।
থানচি হতে প্রথমে আপনাকে যেতে হবে রেমাক্রী। যাবার জন্য একমাত্র উপায় সাঙ্গু নদী হয়ে নৌকা দিয়ে যাওয়া। এখানে ইঞ্জিন চালিত নৌকা ভাড়া পাওয়া যায় যা আপনাকে সরাসরি রেমাক্রী নিয়ে যাবে ও নিয়ে আসবে। সে ক্ষেত্রে আপনাকে থানচি ঘাটে নৌকাচালক সমিতি হতে নৌকা ভাড়া নিতে হবে। শুধু তাই নয় সাথে নিতে হবে গাইড। এটি বাধ্যতামূলক। এখানকার বিজিবি ক্যাম্পে গাইডদের একটি তালিকা আছে। সেখান হতে একজন গাইড নিতে হবে। সাথে কাগজে আপনাদের সব টুরিষ্টদের নাম, ঠিকানা, পিতার নাম, ফোন নাম্বার, মাঝির নাম ইত্যাদি জমা দিয়ে নাফাখুম যাবার অনুমতি নিতে হবে।
রেমাক্রী হতে নাফাখুম পর্যন্ত আর কোন বাহন আপনি পাবেন না। ওই পথটা আপনাকে হেটে যেতে হবে। এখানে পূর্বের গাইডকে রেখে আবার নতুন গাইড নিতে হবে। পূর্বের গাইড ও নৌকা মাঝি আপনার জন্য অপেক্ষা করবে এখানে। এখানেও আপনাকে নতুন করে কাগজে নাম ঠিকানা জমা দিয়ে স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্প হতে অনুমতি নিতে হবে। চাইলে রেমাক্রীতে রাত্রি যাপন করা যায়। তবে দিনে দিনেই নাফাখুম দেখে আবার থানচি ফিরে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে ভোর ৬ টায় থানচি হতে রওয়ানা হতে হবে। রেমাক্রী রাত্রিযাপন করে পরের দিন ভোরে নাফাখুমের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়াই উত্তম। তাতে পরিশ্রমটা অনেক কম হয়। দিনে দিনে ফিরে আসাটা রিতিমত কষ্টকর ও চ্যালেঞ্জিং।
রেমাক্রী বাজার হতে ২ ঘন্টা (খুব ভাল ভাবে হাটলে) হতে ৩ ঘন্টা (আয়েশ করে হাটলে) সময় লাগে নাফাখুম যেতে।

কোথায় থাকবেন
থানচিতে থাকার জন্য একটি সরকারী রেষ্টহাউজ আছে। তাছাড়া এখানকার নৌকা ঘাটে কয়েকটি থাকার ঘর আছে। এসব ঘরে থাকার জন্য কোন পয়সা দিতে হয় না। ৩ বেলা খেলে থাকা ফ্রি। পর্যটন মৌসুমে এসব থাকার জায়গাগুলো বুক হয়ে গেলে আপনি স্থানীয় চেয়াম্যান এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। তিনি আপনাদের একটা না একটা ব্যবস্থা করে দেবেন।
কেউ যদি তিন্দু থাকতে চান তবে সেখানেও কিছূ উপজাতী ঘর ভাড়া পাবেন থাকার জন্য। রেমাক্রীতে বাজারে একটি রেষ্ট হাউজ আছে। এটা ভাড়া নিতে পারেন। তাছাড়া উপজাতীয়দের দোকানে/ঘরে খেলে থাকা ফ্রি।
অনুমিত খরচ
যাতায়াত ভাড়া
• ঢাকা হতে বান্দরবন বাস ভাড়াঃ ৫৫০ টাকা
• বান্দরবন-ভরতপাড়া চান্দের গাড়ীঃ ৩০০০ টাকা
• বান্দরবন-থানচি পাবলিক বাস ভাড়াঃ ১৯০ টাকা
• ভরতপাড়া – থানচি পাবলিক বাস ভাড়াঃ ৭৫ টাকা
• থানচি – রেমাক্রী নৌকা ভাড়াঃ ৪৫০০
• রেমাক্রীতে নৌকার অতিরিক্ত প্রতিরাতঃ ১৫০০ টাকা
থাকা
• থানচি রেষ্ট হাউজঃ ৬০ টাকা প্রতিজন
• রেমাক্রী রেষ্ট হাউজঃ ৬০ টাকা প্রতিজন
খাওয়া
• থানচি বাজারঃ প্রতি বেলা আনুমানিক খাবার খরচ ৯০-১০০ টাকা
• রেমাক্রী বাজরঃ প্রতি বেলা আনুমানিক খাবার খরচ ৯০-১০০ টাকা
গাইড
• থানচি হতে রেমাক্রীঃ ৫০০ টাকা
• রেমাক্রী হতে নাফাখুমঃ ৬০০ টাকা
করনীয়
• খুব কম কাপড় নিতে হবে যেন ব্যাগ হালকা হয়।
• ওডোমস ক্রিম নিতে হবে মশা হতে বাচার জন্য
• হাটার জন্য ভাল গ্রিপ করে এমন প্লাষ্টিকের স্যান্ডেল পরতে হবে। তবে স্যান্ডেলটি আগেই পরে পায়ের সাথে মানিয়ে নিতে হবে।
• থ্রি কোয়ার্টার বা শর্ট প্যান্ট পরে নিতে হবে।
• রেমাক্রী হতে নাফাখুমের পথে যথেষ্ঠ পরিমান খাবার ও পানিয় নিয়ে নিতে হবে।
• ফাষ্ট এইড ও চর্ট লাইট নিতে হব।
• প্রয়োজনীয় ঔষধপত্র সাথে নিয়ে যাওয়া উত্তম
• প্রত্যেক টুরিষ্টের নাম, পিতার নাম, ঠিকানা, বাসার ফোন, পেশা ইত্যাতি লিতে কমপক্ষে ১০ টি ফটোকপি করে নিয়ে যেতে হবে।

1

ami12

files.php

nafa7

neel_vomora_1281306407_3-Remakri_khum1

tinkutravelar_1289580644_31-p1070017-web

পাহাড়ী কন্যা বান্দরবান ৭

পাহাড়ী কন্যা বান্দরবান: দর্শনীয় স্থানসমূহের সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও ছবি-৭

বগা লেক, চিংড়ি ঝর্ণা, কাইখ্যাং ঝর্ণা ও রাইক্ষাং পুকুর পাড়া

সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২৭০০ ফুট উঁচু পাহাড়ে প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্ট বগালেক। কেওকারাডাং এর কোল ঘেঁষে বান্দারবান শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে এবং রুমা উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। পাহাড়ের উপরে প্রায় ১৫ একর জায়গা জুড়ে এই লেকের অবস্থান। এ পানি দেখতে প্রায় নীল রঙের। এ লেকের পাশে বাস করে পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র উপজাতীয় বম ও খুমী সম্প্রদায়। অদ্ভুদ সুন্দর এই নীল রঙ্গের লেকের সঠিক গভীরতা বের করা যায়নি। স্থানীয়ভাবে দুইশ’ থেকে আড়াইশ’ ফুট বলা হলেও সোনার মেশিনে ১৫১ ফুট পর্যন্ত গভীরতা পাওয়া গেছে। এটি সম্পূর্ণ আবদ্ধ একটি লেক। এর আশেপাশে পানির কোন উৎসও নেই। তবে বগালেক যে উচ্চতায় অবস্থিত তা থেকে ১৫৩ মিটার নিচে একটি ছোট ঝর্ণার উৎস আছে যা বগাছড়া (জ্বালা-মুখ) নামে পরিচিত। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে লেকের পানি প্রতি বছর এপ্রিল থেকে মে মাসে ঘোলাটে হয়ে যায়।

রাত্রি যাপনের জন্য বগালেকে জেলা পরিষদের অর্থায়নে একটি রেষ্টহাউস নির্মান করা হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় বম উপজাতী সম্প্রসাদায় কিছু ঘর ভাড়ায় দিয়ে থাকে । বগালেকের পাড়েই বসবাসরত বম সম্প্রদায় পর্যটকদের জন্য রান্না-বান্নার ব্যবস্থা করে থাকে । রুমা বাজার থেকে প্রয়োজনীয় শুকনো খাবার ক্রয় করে নেওয়াই শ্রেয়। উল্লেখ্য যে, নিরাপত্তার জন্য রুমা ও বগালেক সেনা ক্যাম্পে পর্যটকদের রিপোর্টে করতে হয়। স্থানীয় গাইড ছাড়া পায়ে হেটে রুমা থেকে অন্য কোন পর্যটন কেন্দ্রে যাওয়া উচিত নয়।

যাতায়তঃ

রুমা থেকে ২টি পথে বগা লেক যাওয়া যায়। চাদের গাড়ীতে করে বা ঝিরিপথে হেটে। রাস্তার বর্তমান যে অবস্থা তাতে চাদের গাড়ীতে করে গেলেও প্রায় ১ ঘন্টা হাটা লাগবে। বর্ষাকালে ঝিরিপথ মারাত্মক সুন্দর। বিভিন্ন স্থানে বাড়ী বানিয়ে বাকী জীবন পার করে দেওয়ার ইচ্ছা হবে। বৃষ্টিভেজা পাহাড়ে ওঠা প্রচন্ড ঝুকিপূর্ন এবং ঝিরিপথে এই লেকে গেলে আছাড় খাওয়া বাধ্যতামুলক। প্রচুর হাটার শারীরিক এবং মানসিক সামর্থ্য প্রয়োজন । শুষ্ক মৌসুমে বান্দরবান জেলা সদরের রুমা জীপ ষ্টেশন থেকে রুমাগামী জীপে করে রুমা সেনা গ্যারিসন (রুমা ব্রীজ) পর্যন্ত যাওয়া যায়। প্রায় ৪৫ কিমি যেতে ২ ঘন্টার মত সময় লাগে। রুমা বাজার থেকে গাড়ী চেঞ্জ করে বগালেকপাড়া যেতে হয় আর যেতে সময় লাগে প্রায় ২ ঘন্টা। রুমা বাজার থেকে বগালেক পাড়া যাওয়ার রাস্তাটি কাঁচা। প্রচুর ধূলাবালি খেতে হয়- এজন্য বড় আকৃতির রুমাল দিয়ে নাক মুখ পেঁচিয়ে নিলে ভাল হয়- আর রোদ চশমা বেশ কার্যকরী। রুমাবাজার থেকে ঝিরি পথে বগালেক পাড়ার দূরত্ব প্রায় ১৪ কিমি।

বর্ষাকালে রুমাগামী জীপ কইক্ষ্যংঝিড়ি পর্যন্ত যায় । তারপর ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করে প্রায় ১ ঘন্টার অধিক পথ পাড়ি দিয়ে রুমা সদরে যেতে হয় । রুমা থেকে পায়ে হেটে অথবা জীপে করে বগালেক যেতে হয় । বর্ষা মৌসুমে বগা লেক যাওয়া নিতান্তই কষ্টসাধ্য তাই বগালেক ভ্রমনে শীতকালকে বেছে নেওয়া শ্রেয়। বান্দরাবন থেকে রুমা উপজেলা সদরে যেতে খরচ হবে জন প্রতি ৮০/- অথবা পুরো জীপ ভাড়া করলে ২২০০-২৫০০/- আর রুমা থেকে বগালেক যেতে জনপ্রতি ৮০-১০০/- অথবা পুরো জীপ ভাড়া করলে ২২০০-২৫০০/- পর্যন্ত ।

বগা লেক থেকে ৪০ মিনিটের হাঁটা পথ পেড়িয়ে সুন্দর একটা ঝর্ণা (চিংড়ি ঝর্ণা) দেখে আসতে পারেন। আর কেউক্রাডাং চুড়ায় উঠতে হলে বগা লেক হতে আরও ৪-৫ ঘন্টার পাহাড়ী হাঁটা পথ! সে পথও মাড়িয়ে আসতে পারেন। শরীর পারমিট করলে ও মনের জোড় থাকলে বগা লেক থেকে পুরো এক দিনের হাঁটা পথ মাড়িয়ে দেখে আসতে পারেন কাইখ্যাং ঝর্ণারাইক্ষাং পুকুর পাড়া!

11

31

77679585

8

পরবর্তি পর্ব : নাফাখুম জলপ্রপাত (বাংলাদেশের নায়াগ্রা)

পাহাড়ী কন্যা বান্দরবান ৬

পাহাড়ী কন্যা বান্দরবান: দর্শনীয় স্থানসমূহের সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও ছবি-৬

সাঙ্গু নদী, পাতাং ঝিরি ও জিংসিয়াম সৈতার জলপ্রপাত

স্থানীয়ভাবে শঙ্খ নদী, বাংলাদেশের দক্ষিণে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে অবস্থিত একটি পাহাড়ি নদী। কর্নফুলীর পর এটি চট্টগ্রাম বিভাগের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যে কয়টি নদীর উৎপত্তি তার মধ্যে সাঙ্গু নদী অন্যতম। মিয়ানমার সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার মদক এলাকার পাহাড়ে এ নদীর জন্ম। বান্দরবান জেলা ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে এটি বঙ্গোপসাগরে গিযে মিশেছে। উৎসমুখ হতে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত এই নদীর দৈর্ঘ্য ১৭০ কিলোমিটার।

সাঙ্গু নদী বান্দরবান জেলার প্রধানতম নদী। বান্দরবান জেলা শহরও এ নদীর তীরে অবস্থিত। এ জেলার জীবন–জীবিকার সাথে সাঙ্গু নদী ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বান্দরবানের পাহাড়ি জনপদের যোগাযোগের ক্ষেত্রে এ নদী একটি অন্যতম মাধ্যম। শহরের পূর্বে পাশে পাহাড়ী ঢালে বয়ে চলা সাঙ্গু নীদ দেখতে দারুন দৃষ্টি নন্দন।

বান্দরবান থেকে থানচির উদ্দেশে প্রথম চান্দের গাড়িটি সকাল নয়টায় ছেড়ে যায়। ভাড়া একশ পঁয়তালি্লশ টাকা। সময় লাগে প্রায় চারঘণ্টা। দুপুর দেড়টা নাগাদ পৌঁছে যাবেন থানচি বাজারে। পাহাড় ঘেরা থানচি বাজার একটু নিচু জায়গা। সমুদ্র সমতল থেকে মাত্র ৯৭ ফুট (জিপিএস অনুসারে)-এর উচ্চতা। থানচির আশপাশের এলাকাগুলো সাধারণত মোরং, খুমি, ত্রিপুরা ও বম অধ্যুষিত। নিচু এলাকা বলে বমদের পাড়া এখানে নেই বললেই চলে। বাজারের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে সাঙ্গু নদী।

sangu

sangu2

sangu3

sangu4

PAHAR

পাতাং ঝিরি ও জিংসিয়াম সৈতার জলপ্রপাত

পাতাং ঝিরি ও জিংসিয়াম জলপ্রপাত রুমা উপজলোর বান্দরবান এ অবস্থতি। পাতাং ঝিরি জলপ্রপাত বগা লেকে যাওয়ার পথে পড়ে। পাতাং ঝিরি জলপ্রপাত পথ র্পূবে অবস্থতি. যদি কেউ বগা লেক ভ্রমণে যেতে চান তিনি অবশ্যই পাতাং ঝিরি জলপ্রপাত যাবনে। এটি বর্ষাকালে জলপ্রপাত শীর্ষে পৌঁছানো খুবই কঠিন। কিন্তু শীতকালে কিছু নির্ভীক ভ্রমণপিয়াসী জলপ্রপাত শীর্ষে আরোহনের সাহস দখোন। পাতাং ঝিরি খুব বড় জলপ্রপাত নয়, কিন্তু এর গঠন এবং র্পাশ্বর্বতী দৃশ্য সত্যিই ব্যতক্রিমী।

পাতাং ঝিরি ভ্রমণে প্রথম রুমা উপজলোর যেতে হবে। সুতরাং বান্দরবান থেকে রুমা উপজলোর “চাঁদের গাড়ি” (পাবলকি জীপ্) তে যাবেন। নিয়মিত বাস র্সাভিস অথবা একটি ব্যক্তগিত গাড়ির দ্বারা ট্রিপ করা যায়। “চাঁদের গাড়ি” বা বাস র্সাভসি আনুমানিক ১০০-১২০ টাকা নিবে। এটা ৩-৪ ঘন্টার যাত্রা। পরবিহন ভাড়া সবোর মানরে উপর নির্ভর করে নিতে পার। নিরাপত্তার জন্য রুমা সনো ক্যাম্পে র্পযটকদের রিপোর্ট করতে হয়। র্অথাৎ আপনি আপনার নাম, ঠিকানা রেজিস্টারে এন্ট্রি করার মাধ্যমে রিপোর্ট করবেন।

jingsiam  patang2

patang

আগামী পর্বে থাকছে বগালেক, চিংড়ি ঝর্ণা, কাইখ্যাং ঝর্ণা ও রাইক্ষাং পুকুরপাড়া . . .

পাহাড়ী কন্যা বান্দরবান ৫

পাহাড়ী কন্যা বান্দরবান: দর্শনীয় স্থানসমূহের সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও ছবি-৫

চিম্বুক:বাংলাদেশের দার্জিলিং

বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম পর্বত। চিম্বুক সারা দেশের কাছে পরিচিত নাম। যাকে বাংলাদেশের দার্জিলিং হিসাবে অবহিত করা যায়। বান্দরবান জেলা শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে চিম্বুক পাহাড়ের অবস্থান। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে এর উচ্চতা প্রায় ২৫০০ শত ফুট। চিম্বুক যাওয়ার রাস্তার দুই পাশের পাহাড়ি দৃশ্য খুবই মনোরম। চিম্বুক যাওয়ার পথে সাঙ্গু নদী চোখে পড়ে। পাহাড়ের মাঝে আঁকা বাঁকা পথ বেয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সড়ক দিয়ে এতে যাতায়ত মনে হবে গাড়ীতে করে চাঁদের বুকে পাড়ি জমানোর অনুভূতি। ২৫০০ ফুট উঁচুতে দাঁড়িয়ে এ অপরুপ বিচিত্র দৃশ্য দেখতে পাবেন চিম্বুকে।

চিম্বুক পাহাড় থেকে দাঁড়িয়ে পাহাড়ের নিচ দিয়ে মেঘ ভেসে যাওয়ার দৃশ্য অবলোকন করা যায়।এখান থেকে পার্শ্ববর্তী জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এর বিভিন্ন উপজেলাগুলোকে দেখা যায়। বর্ষা মৌসুমে চিম্বুক পাহাড়ের পাশ দিয়ে ভেসে যাওয়া মেঘ দেখে মনে হয় মেঘের স্বর্গরাজ্য চিম্বুক। মেঘের হালকা হিম ছোঁয়া যেন মেঘ ছোয়ার অনুভূতি। চিম্বুককে বাংলার দার্জিলিং বলা হয়।

চিম্বুক থানছি সড়কের দূর্গম পাহাড়ী এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় এখানে হোটেল বা রেস্তোরাঁগড়ে ওঠেনি। জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে একটি রেষ্টহাউস আছে। জেলা প্রশাসকের অনুমোতিক্রমে রাত্রি যাপনের সুযোগ রয়েছে। চিম্বুকের পাশে সেনাবাহিনীর ক্যান্টিন রয়েছে। এখানে সকালের নাস্তা ও দুপুরে খাবার পাওয়া যায়। এছাড়া খাবারের জন্য বান্দরবান থেকে চিম্বুক যাওয়ার পথে মিলনছড়ি ও শাকুরা নামে ২টি পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে। চিম্বুক যাওয়ার পথে বান্দরবান থেকে হালকা খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র নিয়ে যাওয়ায় উত্তম।

যাতায়াতঃ চিম্বুক যেতে হলে বান্দরবান শহরের রুমা বাস স্টেশন থেকে চাঁদের গাড়ি হিসেবে পরিচিত জীপ, ল্যান্ড ক্রুজার, ল্যান্ড রোভার, পাজেরো এবং বান্দরবান-থানছি পথে যাতায়তকারী বাস ভাড়া নিতে হবে (স্পেশাল বাস যা দূর্গম পাহাড়ী পথে চলাচল করতে সক্ষম)। নিজস্ব গাড়ী হলে ভাল হয়। রাস্তা অত্যান্ত দূর্গম হওয়ায় বাসে যাতায়ত করা ঝুঁকিপূর্ণ। চাঁদের গাড়ীতে জন প্রতি ৫০-৬০ টাকা এবং ল্যান্ড ত্রুজার রির্জাভ ১৭০০-১৮০০/-, ল্যান্ড রোভার, পাজেরো ২১০০-২২০০/- টাকা মত নিয়ে থাকে। চিম্বুক থানছি পথে বিকেল ৪ টার পরে কোন গাড়ী চলাচল করে না বিধায় পর্যটকদের ৪ টার মধ্যে ফিরে আসা উচিত।

chimbuk5

CHIMBUK

CHIMBUK2

CHIMBUK3

CHIMBUK4

বর্ষায় গেলে এমন প্রকৃতি আর মেঘের মিতালী চোখে পড়বে।

chimbuk3

chimbuk4

chimbuk6

আগামী পর্বের আয়োজন সাঙ্গু নদী, পাতাং ঝিরি ও জিংসিয়াম সৈতার জলপ্রপাত . . .

পাহাড়ী কন্যা বান্দরবান ৩

পাহাড়ী কন্যা বান্দরবান: দর্শনীয় স্থানসমূহের সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও ছবি-৩

মেঘলা পর্যটন কেন্দ্র

বান্দরবান শহরের প্রবেশদ্বার বান্দরবান কেরাণীহাট সড়কের পাশেই পার্বত্য জেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স অবস্থিত। পাহাড়ের খাদে বাধঁ নির্মান করে কৃত্রিম হ্রদের সৃষ্টি করা হয়েছে । বান্দরবান শহর থেকে এর দূরত্ব ৪ কিলোমিটার। বেড়াতে আসা পর্যটকদের চিত্ত বিনোদনের জন্য এখানে রয়েছে শিশুপার্ক, সাফারি পার্ক, চিড়িয়াখানা, প্যাডেল বোট, ক্যাবল কার, উন্মুক্ত মঞ্চ, চা বাগান, এবং সাময়িক অবস্থানের জন্য একটি রেষ্ট হাউজ যা জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে এটি পরিচালিত হয়। এছাড়া আকর্ষণীয় একটি চিড়িয়াখানা এ কমপ্লেক্সের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে বহুগুন। বান্দরবান শহরের প্রবেশদ্বার বান্দরবান-কেরানীহাট সড়কের পার্শ্বেই অবস্থিত এই রিসোর্টে রয়েছে পাহাড়বেষ্টিত স্বচ্ছ জলের মনোরম আঁকাবাকা লেক। এখানে লেকের উপরে রয়েছে আকর্ষণীয় দুটি ঝুলন্ত ব্রিজ। এখানে প্রবেশ ফি মাত্র ২০/- টাকা

যাতায়াত এবং থাকা-খাওয়াঃ

মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রে রয়েছে জেলা প্রশাসনের একটি সুন্দর রেস্ট হাউজ রয়েছে। যেখানে অবকাশ ভোগ করা যায় ভালভাবে। এখানে রাত্রিযাপনের জন্য চারটি কক্ষ রয়েছে। প্রতি কক্ষ ২৫০০/- (প্রতিদিন)।বান্দরবান শহর থেকে চান্দের গাড়ি, বেবি টেক্সি, জীপ, কার যোগে যাওয়া যায়। যাতায়াত ভাড়াঃ ২৫০/- টেক্সিযোগে যাওয়া-আসা।

যোগাযোগ, মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রে, বান্দরবান :

ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, মেঘলা/এনডিসি। ০৩৬১-৬২৫০৬, ০১৭১৪২৩০৩৫৪

মেঘলায় বেড়াতে আসা পর্যটকদের খাবার ও রাত্রিযাপনের জন্য বান্দরবান শহরেও কিছু মাঝারি মানের হোটেল রয়েছে। এছাড়া পর্যটকদের জন্য খাবার ও রাত্রিযাপনের জন্য পাশেই সু-ব্যবস্থা রয়েছে । বান্দরবান বাস ষ্টেশন থেকে মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স যেতে লোকাল বাসে জনপ্রতি ১০-১২ টাকা এবং টেক্সি রিজার্ভ ১০০-১২০ টাকা, এবং ল্যান্ড ক্রোজার, ল্যান্ড রোভার ও চাঁদের গাড়ী ৪৫০-৫০০/- টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে।

MEGHLA2

MEGHLA 4

MEGHLA 3

আগামী পর্বের আয়োজন শৈল প্রপাত, নীলাচল ও শুভ্রনীলা, মিলনছড়ি …

পাহাড়ী কন্যা বান্দরবান ৪

পাহাড়ী কন্যা বান্দরবান: দর্শনীয় স্থানসমূহের সংক্ষিপ্ত বিবরণ ও ছবি-৪

শৈল প্রপাত, নীলাচল শুভ্রনীলা, মিলনছড়ি

শৈল প্রপাত

বান্দরবান রুমা সড়কের ৮ কিলোমিটার দূরে শৈলপ্রপাত অবস্থিত। এটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব সৃষ্টি। ঝর্ণার হিমশীতল পানি এখানে সর্বদা বহমান। এই ঝর্ণার পানিগুলো খুবই স্বচ্ছ এবং হীম শীতল। বর্ষাকালে এ ঝর্ণার দৃশ্য দেখা গেলেও ঝর্ণাতে নামা দুস্কর, বছরের বেশীর ভাগ সময় দেশী বিদেশী পর্যটকে ভরপুর থাকে। রাস্তার পাশে শৈল প্রপাতের অবস্থান হওয়ায় এখানে পর্যটকদের ভিড় বেশী দেখা যায়। এখানে দুর্গম পাহাড়ের কোল ঘেশা আদিবাসী বম সম্প্রদায়ের সংগ্রামী জীবন প্রত্যক্ষ করা।

যাতায়াতঃ

বান্দরবান শহর থেকে টেক্সি, চাঁদের গাড়ি কিংবা প্রাইভেট কার ও জীপ ভাড়া করে শৈলপ্রপাতে যাওয়া যায়। শহর থেকে জীপ গাড়ীতে ৬০০-৭০০ টাকা এবং চাঁদের গাড়ীতে ৪৫০-৫০০ টাকা লাগবে।

SAILO

SAILO3

SAILO2

SHAILO3

নীলাচল শুভ্রনীলা

বান্দরবান জেলা শহেরর নিকটবর্তী পর্যটন কেন্দ্র। এটি জেলা সদরের প্রবেশ মুখ টাইগার পাড়ার নিকট পাশাপাশি অবস্থিত এ পর্যটন কেন্দ্র দুটি। নীলাচল জেলা প্রশাসন ও শুভ্রনীলা বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এ দুটি পর্যটন কেন্দ্রটি পরিচালিত হয় । এ পর্যটন কেনেদ্রর উচ্চতা প্রায় ১৭০০ ফুট। বান্দরবান জেলা সদর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে এই পর্যটন কেনদ্র অবস্থিত। এ পাহাড়ের উপর নির্মিত এ দুটি পর্যটন কেনদ্র থেকে পার্শ্ববর্তী এলাকার দৃশ্য দেখতে খুবই মনোরম।

যাতায়াতঃ

বান্দরবান শহরের বাস ষ্টেশন থেকে জীপ, ল্যান্ড ক্রু জার, ল্যান্ড রোভার ভাড়া নিয়ে যেতে হবে অথবা বান্দরবান শহরের সাঙ্গু ব্রীজের কাছে টেক্সি ষ্টেশন থেকে টেক্সি ভাড়া নিয়ে নীলাচল ও শুভ্রনীলায় যেতে পারেন । জীপ, ল্যান্ড ক্রুজার, ল্যান্ড রোভার ৬০০-৭০০/-, টেক্সি ৩০০/- মত নিয়ে থাকে।

রেস্ট হাউজ বুকিং: ০৩৬১-৬২৬০৫, ০১৭১৪২৩০৩৫৪, ০১৭১২৭১৮০৫১

NILACHOL2

নীলাচল ওয়াচ টাওয়ার বা টাইগার হিল।

BD CITY

নীলাচল ওয়াচ টাওয়ার থেকে দেখা বান্দরবান শহর।

PAHAR2

মিলনছড়ি

মিলনছড়ি বান্দরবান শহর হতে ৩ কি:মি: দক্ষিণ পূর্বে শৈল প্রপাত বা চিম্বুক যাওয়ার পথে পড়ে। এখানে একটি পুলিশ ফাড়ি আছে। পাহাড়ের অতি উচ্চতায় রাস্তার ধারে দাড়িয়ে পূর্ব প্রান্তে অবারিত সবুজের খেলা এবং সবুজ প্রকৃতির বুক ছিড়ে সর্পিল গতিতে বয়ে সাঙ্গু নামক মোহনীয় নদীটি।

হিল সাইড রিসোর্টঃ ফোন: 01556539022, 01730045083

MILON 1

MILON 2

পরবর্তী আয়োজনে থাকছে বাংলাদেশের দার্জিলিং নামে খ্যাত চিম্বুক পাহাড় . . .