Monthly Archives: এপ্রিল 2015

সাজেক ভ্যালী : দেখে এলাম বাংলার দ্বিতীয় দার্জিলিং

 ১৩ তারিখ ফকিরাপুল থেকে এস, আলম পরিবহণে রাত ১১.১৫টায় (যদিও যানজটের কারণে বাস ছেড়েছিল ১২.১৫টায়) খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। টিকেট জনপ্রতি ৫২০টাকা।

সকাল ০৭.১৫টায় খাগড়াছড়ি পৌঁছলাম। খাগড়াছড়ি থেকে ৫০টাকা ভাড়ায় অটোরিক্সায় দিঘীনালা রওনা হলাম।

49

1

দিঘীনালা যাওয়ার পুর্বেই জামতলী নেমে পড়লাম। খাওয়া দাওয়া সেরে মোটর সাইকেলে রওনা দিলাম সাজেকের উদ্দেশ্যে। ভাড়া ১৫০০টাকা রিজার্ভ। শফিকুল ইসলাম ভাইয়ের মোটর সাইকেল ভাড়া নিয়েছিলাম আমরা। খুবই নম্র-ভদ্র মিশুক একজন লোক তিনি। তার মোবাইল নম্বরটা নিয়ে এসেছি যদি আবার কখনো যাই…0155 97852362

3পথে প্রথমে পরবে দীঘিনালা আর্মি ক্যাম্প । পরে পরবে ১০ নং বাঘাইহাট পুলিশ ও আর্মি ক্যাম্প । এখান থেকে আপনাকে সাজেক যাবার মূল অনুমতি নিতে হবে। অর্থাৎ নিরাপত্তার জন্য আপনার নাম-ঠিকানা রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করাতে হবে। তারপর কাসালং ব্রিজ। পরে টাইগার টিলা আর্মি পোস্ট ও মাসালং বাজার।

6

বাজার পার হলে পরবে সাজেকের প্রথম গ্রাম রুইলুই পাড়া যার উচ্চতা ১৮০০ ফুট । এর প্রবীণ জনগোষ্ঠী লুসাই । এছাড়া পাংকুয়া ও ত্রিপুরারাও বাস করে । ১৮৮৫ সালে এই পাড়া প্রতিষ্ঠিত হয় ।

11

12

12-1

13

14

15

16

17

18

20

21

22

23

24-1

24-2

24-3

27

25

26রুইলুই পাড়া থেকে অল্প সময়ে পৌঁছে যাবেন সাজেক । সাজেকের বিজিবি ক্যাম্প বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিজিবি ক্যাম্প । এখানে হেলিপ্যাড আছে । সাজেকের শেষ গ্রাম কংলক পাড়া । এটিও লুসাই জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত পাড়া । কংলক পাড়া থেকে ভারতের লুসাই পাহাড় দেখা যায় ।

27-1

28

29

30

31

32

33

33-1চান্স পেয়ে টাওয়ারে উঠার ব্যর্থ চেষ্টাও করলাম একবার…

33-2

34

35

36

37

38

39

42

41

40-1

40

42-1

43

44

45

46

47

48

49

50

51

52

53

54

55মোটর সাইকেল চালাতে পারি না, তবুও একটু ভাব নিতে দোষ কোথায়…

56

58

59

60

62

67

68সাজেক যেতে এমন অনেক উচুঁ-নিচু আঁকা-বাঁকা পথ পেরোতে হয়। তাই যারা ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে যেতে চান অথচ পথের বাঁক চেনা-জানা নেই, তাদের ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে না যাওয়ার অনুরোধ করছি। কারণ যে কোন সময় গাড়ি রাস্তা থেকে ছিটকে পড়ে জীবনহানি ঘটাতে পারে।

10

9

8-3

8

8-1

8-2

7

5-4

5-3

5-2

5-1

5

4সাজেক পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছে গেলাম একসময়। শেষ রাস্তাটুকু এখনো পাকা হয়নি…

65পাহাড়ের চূঁড়ায় উঠে ইচ্ছে করে আকাশ ছুঁয়ে দেখি। কিন্তু আল্লাহ্ তোমার বিশাল আকাশ, ক্ষুদ্র আমি ইচ্ছে করলেও ছুতে পারি না …

63একরাশ স্মৃতি এলবামে পুরে ফিরে চললাম ঢাকার পথে…

Lখাগড়াছড়ির সিস্টেম রেস্তোরায় ঐতিহ্যবাহী খাবার খেতে ভুলবেন না । খাগড়াছড়ি থেকে জীপগাড়ি (লোকাল নাম চাঁন্দের গাড়ি) রিজার্ভ নিয়ে একদিনে সাজেক ভ্যালী ঘুরে আসতে পারবেন । ভাড়া নিবে ৫০০০-৬০০০ টাকা । এক গাড়িতে ১৫ জন বসতে পারবেন । অথবা খাগড়াছড়ি শহর থেকে দীঘিনালা গিয়ে সাজেক যেতে পারবেন । বাসে দীঘিনালা জন প্রতি ৪৫ টাকা, অটো ৫০টাকা এবং মোটর সাইকেলে জন প্রতি ভাড়া ১০০ টাকা । দীঘিনালা থেকে ১২০০-১৫০০ টাকায় মোটর সাইকেল রিজার্ভ নিয়েও সাজেক ঘুরে আসতে পারবেন । ফেরার সময় অবশ্যই সন্ধ্যার আগে আপনাকে বাঘাইহাট আর্মি ক্যাম্প পার হতে হবে । তা না হলে অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে । ক্যাম্পের ছবি তোলা নিষেধ এই বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখবেন ।

মধুটিলা ইকোপার্ক : গারো পাহাড়ের আঁকাবাঁকা উঁচু-নিচু পথ পেরিয়ে…

ঘুরে আসুন মধুটিলা ইকোপার্ক : গারো পাহাড়ের আঁকাবাঁকা উঁচু-নিচু পথ পেরিয়ে প্রকৃতির কোলে

Untitled-1মধুটিলা ইকোপার্ক। শেরপুর জেলা শহর থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরত্বে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী নালিতাবাড়ী উপজেলাধীন এবং ময়মনসিংহ বন বিভাগ নিয়ন্ত্রিত মধুটিলা রেঞ্জের সমেশচূড়া বিটের প্রায় একশ হেক্টর পাহাড়ি বনভূমি নিয়ে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের অধীনে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে মধুটিলা ইকোপার্ক প্রকল্পটি গড়ে উঠেছে। সৌন্দর্যপিপাসু লোকজনের জন্য বিনোদনের দ্বার উন্মুক্ত করেছে এই ইকোপার্কটি। নিঝুম দ্বীপের মতো এখানে রয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় পাহাড়। পাশেই আড়াই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ভারতের মেঘালয় রাজ্যের তুড়া পাহাড়। রকমারি জীবের প্রতিকৃতিসমৃদ্ধ ইকোপার্কটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত ছোট-বড় অসংখ্য পাহাড়ঘেরা পরিবেশ সত্যিই মুখরিত- আনন্দিত হওয়ার মতো।

ইকোপার্কের প্রধান ফটক পেরুতেই চোখে পড়বে বন্যপ্রাণী হাতির ভাস্কর্য। এ যেন বাস্তবরূপে দাঁড়িয়ে আছে। কয়েক পা বাড়ালেই চোখে পড়বে লেকের কোণে কুমারী মৎস্যকন্যা আর লেকে বেড়ানোর পানিতে ৩টি প্যাডেল বোট ও ৫টি দেশীয় নৌকা। পাহাড়ি ঝরনাধারার পানি এসে মিশেছে লেকের পানিতে। কালভার্টের ডানে রয়েছে হালকা নাস্তা চা-কফিসহ স্টেশনারি সামগ্রীর দোকান। একটু এগোলেই মনোরম স্টার ব্রিজ, যা লেকের পানির উপর নির্মিত। একসঙ্গে শতাধিক লোক দাঁড়িয়ে-বসে উপভোগ করা যায় বনভোজনের আড্ডা। পাশেই রয়েছে কৃত্রিম কুমির। দেখতে বাস্তব মনে হবে। এরপর বিস্তর এলাকায় ক্ষণে ক্ষণে চোখে পড়বে বিভিন্ন পশুপাখির ভাস্কর্য। স্থানে স্থানে রয়েছে বসার স্থান। উঁচু পাহাড় কেটে ঢালু রাস্তা তৈরি করা হয়েছে রেস্টহাউজে যেতে। প্রাইভেট-মাইক্রো চলার উপযোগী খাঁজকাটা পাকা রাস্তার মাঝের সারিতে রয়েছে নানা রঙের পাথর বসানো এক শিল্পকর্ম যাতে পা পিছলে না যায়। আর উপর-নীচ থেকে দাঁড়ালে মনে হবে বাহারি ফুলের সারি। দু’পাশে রয়েছে জীববৈচিত্র্যের প্রতিকৃতি। ভাস্কর্যগুলো দেখলে মনে হবে যেন শিল্পীর হাতের নিখুঁত চিত্র। রেস্টহাউজের বাঁকা সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে উপভোগ করা যায় প্রকৃতির মনোমুগ্ধ পরিবেশ। উঁচু-নীচু পাহাড়গুলোর দিকে তাকালে মনে হবে পানির ঝরনাধারা আর এরই নিচে রয়েছে লেক। আসলে সেগুলো পাহাড়ে ওঠার রাস্তা। কিছুদূর ঘুরে এসে বিশ্রাম করুন রেস্টহাউজে। উপভোগ করুন রেস্টহাউজের আধুনিক সুযোগ সুবিধা। তারপর খাওয়া-দাওয়া সেরে আবার বেরিয়ে পড়–ন পাহাড় থেকে পাহাড়, অন্য পাহাড়ে। জীববৈচিত্র্য, বন্যপ্রাণীর ভাস্কর্য আর প্রকৃতির সঙ্গে মিতালী করে ক্যামেরায় ছবি তুলুন চেনা অতীতকে স্মৃতি করে। ফেরার পালায় সময় পেলে যেতে পারেন নিকটবর্তী বারমারি মিশন বা খ্রিস্টান মিশনে। এটিও জেলার আকর্ষণীয় দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিত। আবার মধুটিলার অতি নিকটেই রয়েছে বৃহত্তর জেলার অন্যতম পর্যটক কেন্দ্র গজনী অবকাশ কেন্দ্র, যা ইতিমধ্যেই সারাদেশে অত্যাধুনিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

এখানে উঁচু পাহাড়ের গাছের ছায়ায় বসে কাটানো যাবে দুপুর ও বিকেল। ইকোপার্কে ঢুকতে জনপ্রতি পাঁচ টাকায় টিকিট কাটার ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে আলাদা ফি দিয়ে হ্রদে প্যাডেল বোট চালিয়ে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ। ওয়াচ টাওয়ারে উঠে ভারতে অবস্থিত উঁচু উঁচু পাহাড় আর সীমান্তবর্তী সবুজ গারো পাহাড় দেখতে পাবেন। ভাগ্য ভালো হলে ওয়াচ টাওয়ার থেকেই মিলতে পারে বুনোহাতির দলের দেখা। তারা সাধারণত শেষ বিকেলে অথবা সন্ধ্যায় গভীর অরণ্য থেকে নেমে আসে।

প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর নৈসর্গিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি দেখতে পাবেন আদিবাসী গারো, হাজং, কোচ, হদি বর্মণ সম্প্র্রদায়ের অধিবাসীদের। গারো পাহাড়ের গজারি বনের মাঝ দিয়ে সরু রাস্তায় গাড়ি চালানোর রোমাঞ্চকর মুহূর্তগুলো আপনি উপভোগ করতে পারেন। খাওয়া-দাওয়া নিয়ে চিন্তার তো কোনো অবকাশই নেই বরং মনকে প্রফুল্ল রাখতে আছে টাটকা খাবারের সুব্যবস্থা। মধুটিলা ইকোপার্কে ঢুকতে প্রবেশ মূল্য দু’জন যাত্রীসহ মোটরসাইকেল ২০, বড় বাস ৫০০, মিনিবাস ২০০ ও লোকাল বাস ৪৫০ টাকা। এর ভিতরে রয়েছে ছোট একটি চিড়িয়াখানা। আর রয়েছে অসম্ভব সুন্দর একটি কৃত্রিম লেক এবং একটি সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার।

মধুটিলা ইকোপার্ক গেটের বাঁদিকের রাস্তা দিয়ে বাঁয়ে ১০০ গজ এগিয়ে গেলেই দেখা মিলবে ৫৫ ফুট উঁচু ওয়াচ টাওয়ারের। পাহাড়ের উঁচু টিলায় নির্মাণ করা হয়েছে এটি। ওয়াচ টাওয়ারের উপর দাঁড়িয়ে উপভোগ করবেন প্রকৃতির মজা, নিস্তব্ধ-নীরবতা। যেন এক নিথর বাতায়ন। সর্বত্রই যেন সবুজের রাজ্য। দেখবেন সামান্য দূরে অবস্থিত ভারতের মেঘালয় রাজ্যের তুড়া পাহাড়। মূল্যবান ও বিরল উদ্ভিদ। টাওয়ারে ওঠার টিকিট ৫ টাকা। এখানে দাঁড়িয়ে খালি চোখে আবছা আবছা ভারতের বিএসএফ ক্যাম্প দেখা যায়। আবার পরিষ্কারভাবে দেখতে চাইলে টাওয়ারে বাইনোকুলার রয়েছে। দূরবিনে ভারতের ক্যাম্প দেখতে ৫ টাকা লাগে। পাহাড়ের চূড়ায় সাইট ভিউ টাওয়ারে উঠলেই চোখ জুড়িয়ে যায় সীমান্ত পেরিয়ে উঁচু উঁচু পাহাড় আর সবুজ অরণ্যের মনোরম দৃশ্য দেখে। দূরের অরণ্যকে একটু কুয়াশাচ্ছন্ন মনে হলেও এর সৌন্দর্যের কোনো কমতি নেই। ভাগ্য ভালো হলে ওয়াচ টাওয়ার থেকেই মিলতে পারে বুনোহাতির দলের দেখা। তারা সাধারণত শেষ বিকেলে অথবা সন্ধ্যায় গভীর অরণ্য থেকে নেমে আসে।

গারো পাহাড়ের আঁকাবাঁকা উঁচু-নিচু পথ পেরিয়ে যত দূর এগোনো যায়, ততই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমারোহ। টাওয়ার থেকে ডানদিকে এগোলে উঁচু পাহাড়ে ওঠার সিঁড়ি রয়েছে। সিঁড়িটি এত খাড়া যে, এটাতে কেউ একবার উঠলে বসে একটু বিশ্রাম না নিলে হাঁফিয়ে উঠতে হবে। সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতেই চোখে পড়বে অত্যাধুনিক বন বিভাগের রেস্ট হাউস। এখানে ভ্রমণপ্রিয়দের দিনের বেলায় ব্যবহারের জন্য রয়েছে পাহাড়ের চূড়ায় মহুয়া রেস্টহাউস। এ রেস্ট হাউস থেকে নেমে আসার পথে চোখে পড়বে শিশুদের জন্য শিশুপার্ক।

ইকোপার্কে রয়েছে আলাদা ফি দিয়ে হ্রদে প্যাডেল বোট চালিয়ে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ। কৃত্রিম লেকে প্রতি প্যাডেল বোটে ৫-৬ জন বসা যায়। ৩০ মিনিট চালাতে ভাড়া ৫০ টাকা।

বিভিন্ন রাইড নিয়ে সম্পূর্ণ আলাদা করে গড়ে তোলা হয়েছে শিশুদের খেলাধুলা ও বিনোদনের জন্য শিশুপার্ক। এখানে ভ্রমণপ্রিয়দের দিনের বেলায় ব্যবহারের জন্য রয়েছে পাহাড়ের চূড়ায় মহুয়া রেস্টহাউস। এটি ব্যবহার করতে চাইলে ময়মনসিংহ অথবা শেরপুর বন বিভাগের অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। এ ছাড়া এখানে রয়েছে ডিসপ্লে মডেল, তথ্যকেন্দ্র, গাড়ি পার্কিং জোন, ক্যানটিন, মিনি চিড়িয়াখানা। ঔষধি ও সৌন্দর্যবর্ধক প্রজাতির বৃক্ষ, মৌসুমি ফুলসহ বিভিন্ন রঙের গোলাপের বাগান। রয়েছে বেশ কয়েকটি পিকনিক স্পটও। পার্কটিতে জীববৈচিত্র্য ও প্রাণীর সমাহারও চোখে পড়বে।

সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত থাকতে পারবেন এখানে। সপ্তাহে সাতদিন খোলা। পিকনিক স্পট ভাড়া নেবার জন্যে যোগাযোগ করতে পারেন জনাব এনায়েত সাহেবের সাথে যিনি এখানকার রেঞ্জ অফিসার। তাঁর ফোন নম্বরঃ ০১৭১২২৭২০২৪। ঢাকা থেকে পিকনিকের জন্যে যদি যেতে চান, তাহলে খুব ভোরে রওনা দিয়ে দুপুর নাগাদ মধুটিলা পৌঁছাতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে জার্নির ধকলটা বেশি পড়বে।

পর্যটন সুবিধাদির মধ্যে আছে পনের একর শোভাবর্ধনকারী ও বিরল প্রজাতির বনায়ন। বিশ একর বনভূমিতে রয়েছে ঔষধি প্রজাতির বনায়ন, রেস্টহাউজ, বাসগৃহ। চার রুমবিশিষ্ট অত্যাধুনিক রেস্টহাউজ নির্মাণাধীন। বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর ভাস্কর্য বা প্রতিকৃতি হিসেবে রয়েছে ২টি হাত, ২টি বাঘ, মৎস্যকন্যা, ঈগল, হনুমান, প্যাঁচা, সাপ, কুমির, হরিণ, ক্যাঙ্গারু, ব্যাঙ, সিংহ। অবকাঠামোগত কাজের মধ্যে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, ১টি স্টার ব্রিজ, পাবলিক টয়লেট, বসার স্থান। লেকের পানিতে চরে বেড়ানো আর ব্যবহারের জন্য রয়েছে ৩টি প্যাডেল বোট ও ৫টি দেশীয় নৌকা। বর্তমানে ইকোপার্কটি দর্শনার্থী-পর্যটকদের জন্য উš§ুক্ত রয়েছে। বিনা পয়সায় পর্যটন কেন্দ্রটি ঘুরে বেড়ানোর জন্য প্রতিনিয়তই ভিড় বাড়ছে। কোলাহলমুক্ত শান্ত পরিবেশে এসে অনেকেই উপভোগ করছে অনাবিল আনন্দ। শহরের কোলাহল ছেড়ে প্রতিদিন ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে ভ্রমণ পিপাসুরা আসছে লোভনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকনে। ঘুরে বেড়াচ্ছে পাহাড়ের পর পাহাড়। চিত্তবিনোদনের জন্য রয়েছে বিশাল পরিসর।

যেভাবে যাবেনঃ

ঢাকা থেকে মধুটিলা ইকোপার্কের দূরত্ব প্রায় ২০০ কিলোমিটার। ঢাকার মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে বাসে শেরপুরে আসতে হবে। ভাড়া ২০০-২৫০ টাকা। শেরপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নী বাজার পর্যন্ত লোকাল বাস সার্ভিস রয়েছে। ভাড়া ২০-৩০ টাকা। নন্নী বাজার থেকে রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ভাড়ায় পাওয়া যায়। শেরপুর থেকে ভাড়ায় মাইক্রোবাস, অটোরিকশা অথবা মোটরসাইকেলে মধুটিলা ইকোপার্কে আসা যাবে। অথবা ঢাকার মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে সরাসরি নালিতাবাড়ী পর্যন্ত গেটলক সার্ভিস রয়েছে।  ভাড়া ২৫০-২৮০ টাকা। নালিতাবাড়ী থেকে অটোরিকশা, মোটরসাইকেলে ২০-২৫ মিনিটে মধুটিলায় যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে দিনে এসে দিনেই ফিরে যাওয়া যায়। তবে ইচ্ছে করলে শেরপুর শহরে থাকতে পারেন এক রাত।

40047841

40047849

40091946

rokonraiyan_1335438887_14-modhutila_iko_park    By-the-Garo-hills-680x365

1408766247.

modhutila-eco-park-resort

RR07_1312184490_5-Photo-0038

RR07_1312184540_6-Photo-034

16cfbd1f02925e446320da91c687c6ef_xlarge   IMG_0835

681

Tiger-p    IMG_0729

IMG_0693

তোতামিয়ার হোটেল নিরিবিলি : ভোজন রসিকরা ঘুরে আসতে পারেন

ঘুরে আসুন কাপাসিয়ায় তোতামিয়ার হোটেল নিরিবিলি

ব্লগে পড়ার পর অনেক দিন থেকেই ইচ্ছে ছিল ভুঁড়ি ভোজের উদ্দেশ্যেই একটা ভ্রমন হবে এখানে। তো অনেক কষ্টে অফিস থেকে গাড়ী ম্যানেজ করে আমি আর অফিস কলিগরা মিলে ৪ জন রওনা হলাম কাপাসিয়ায় তোতামিয়ার হোটেল নিরিবিলির উদ্দেশ্যে।

১১টায় রওনা দিলাম। কিন্তু এদিন ঢাকা শহরের সকল জ্যাম যেন আমাদের কপালে এসেই পড়তে লাগল। গাজীপুর চৌরাস্তা পৌঁছতেই দুপুর ১টা হয়ে গেল। গাজীপুর ময়মনসিংহের রাস্তার সংস্কার কাজ চলার জন্য হাতে একটু বাড়তি সময় নিয়ে বেরুনো উচিত ছিল। পড়েছিলাম আর শুনেছিলাম ঢাকা শহর থেকে ঘন্টা তিনেকের মধ্যে পৌঁছানো যাবে। কিন্তু রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেট এলাকায় পৌঁছতেই বিকেল ছুঁই ছুঁই করছিলো। আমরা গাড়ী থেকে নেমে যুহরের সালাত আদায় আদায় করে নিয়ে আবার যাত্রা শুরু করলাম। আমাদের ক্লান্তি আর বিরক্ত এসে যাচ্ছিল।  তবে আমাদের পথের ক্লান্তি অনেকটাই দূর হয়ে গেল যখন গাজীপুর ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক পার হয়ে সবুজ রাস্তা ধরে ছুটে চলবেন। রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টমেন্ট পার হবার পর দুইপাশে শুধুই সবুজ শালবন। এলাকাবাসীর নিকট জিজ্ঞেস করতে করতে অবশেষে সাড়ে ৫টা নাগাদ টোক বাজার পৌঁছলাম। টোক বাজার থেকে বামে রাস্তায় কয়েক শ গজ দুরেই নিরিবিলি পরিবেশে দেখা মিললো হোটেল নিরিবিলির।

পেটে প্রচন্ড ক্ষিধে থাকায় হাত মুখ ধুঁয়ে রিতিমতো ঝাপিয়ে পড়লাম খাওয়ার জন্য। ক্ষুধা বেশী থাকার কারণেই কি-না জানি না খাবার মান আর স্বাদ নিয়ে শুধু একটাই কথা মনে হলো এতো অমৃত। সবকিছুই চেখে দেখার চেষ্টা করলাম, কিন্তু ক্ষুধা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় অনেক আইটেমই খেতে পারলাম না। আমরা ৩৫ টির মতো আইটেম পেয়েছিলাম। খেতে পারলাম শেষ পর্যন্ত ১৭ আইটেম। তবে মনে রাখার মতো কিছু আইটেম, মাংশঃ মুরগীর গোস্ত ঝুরি করে রসুন দিয়ে ভুনা, কবুতরের মাংশ মাছ: চিংড়ি মাছ, বাতাসী মাছ, গুড়া মাছ, শুটকি মাছ শাক: লাল শাক, পুই শাক, সর্ষে শাক, মুলা শাক, পাট শাক ভর্তা: আলু ভর্তা, সর্ষে ভর্তা, কালো জিরা ভর্তা, শুটকি ভর্তা, মরিচ ভর্তা, ডিম ভর্তা, আচার: বড়ই আচার, জলপাই আচার, মিক্সড আচার, তেতুলের আচার সবজি: ১২ রকমের মিক্সড সবজি

ভড়পেট ভাত খেয়ে চোখে পড়লো হোটেলের সামনের ছোট পানের দোকানের উপরে। খোঁজ নিয়ে জানা গেলো তার পানও তোতামিয়ার হোটেল থেকে কম যায় না। ৪০ আইটেমের বেশি মসলা দিয়ে পান তৈরি হয়। লোভ সামলাতে না পেরে সেই বিখ্যাত সেই শাহী পানের অর্ডার দিলাম। বিভিন্ন আইটেম আর বানানোর কসরত দেখে এই পানের মূল্য ২০ টাকা খুব কমই মনে হলো। পান খাবার পরে মনে হলো আবার যদি আসি এই টোক বাজারে তবে পান না খেয়ে ফিরবো না।

খাওয়া শেষে তোতা মিয়ার নিজের মুখেই তার এই হোটেলের কাহিনী শুনলাম-

আট ভাইয়ের সংসারে তোতামিয়া অবস্থান পঞ্চম। আর তার জন্ম এই টোক নয়ন এলাকাতেই। প্রায় ২০ বছর আগে কক্সবাজের এক হোটেলে বয় হিসেবে কাজ শুরু করেন, সেখান থেকে চট্টগ্রামের একটি হোটেলে দীর্ঘদিন বাবুর্চি হিসেবে কাজ করেন। রান্নার হাত ভালো থাকায় চট্টগ্রামের ওই হোটেলের সুনাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগেনি। সাথে হোটেলের বিক্রিও বেড়ে যায়। তোতামিয়ার রান্নার খ্যাতি এই টোকের লোকজনের কানেও পৌঁছে যায়। এক পর্যায়ে এলাকার শুভাকাঙ্খীরা তোতা মিয়াকে অনুরোধ করেন, টোক নয়ন বাজারে নিজস্ব একটি খাবার হোটেল দেওয়ার জন্য। সে অনুরোধে সাড়া দিয়ে প্রায় বছর সাত আগে তোতা মিয়া টোক নয়ন বাজারের ছায়াঘেরা সবুজের নিরিবিলি পরিবেশে চালু করেন ‘হোটেল নিরিবিলি’। তোতা মিয়া ও তার ছেলে মিলে চালান এটি। রান্নার যাবতীয় তত্বাবধান করে থাকেন তার স্ত্রী সালেহা বেগম। তিনি ও তার স্ত্রী নিজ বাড়িতে রান্না করে হোটেলে নিয়ে আসেন। প্রতিদিন সব মিলিয়ে মোট কম-বেশী ৭০ টি আইটেম তৈরী করা হয়। সকাল ৮টা থেকে একটানা রাত ২টা পর্যন্ত খোলা থাকে তোতা মিয়ার হোটেল। আমাদের মতো অনেকেই শখ করে প্রকৃতির এই ছায়াঘেরা সুনিবির পরিবেশে শহুরে জঞ্জালকে পিছে ফেলে একটু গ্রাম্য মজাদার রান্নার স্বাদ নিতে আসেন।

দুপুরের খাওয়া (নাকি সন্ধার) শেষে আরামের চোটে ঝিমুনি দিতে খুব মন চাইছিলো। কিন্তু মাগরিবের আযান শুনে সে ইচ্ছা ত্যাগ করতে হলো। তো আমরা উঠে পড়লাম বাড়ী ফেরার উদ্দেশ্যে। পথিমধ্যে মাগরিবের সালাত আদায় করে নিলাম। তারপর আবার যাত্রা শুরু করলাম আপনালয়ে… ও একটি কথা বলে রাখছি- ঢাকার রামপুরা থেথে হোটেলের দুরত্ব গাড়ীর মিটারে উঠেছিল ৯৪কিমি।

তবে যারা বাসে আসতে চান তারা তোতা মিয়ার নিরিবিলি হোটেলে আসতে হলে ঢাকার গুলিস্তান (ফুলবাড়িয়া) থেকে ঢাকা পরিবহন, প্রভাতী বনশ্রী পরিবহন, ঢাকার মহাখালী থেকে ভাওয়াল পরিবহন, জলসিড়ি পরিবহন, সম্রাট পরিবহন, এগারসিন্দুর পরিবহন, অনন্যা পরিবহন, বিআরটিসির গাড়ি, অনন্যা ক্লাসিক পরিবহন, বন্যা পরিবহন, উজান ভাটি পরিবহনের গাড়ি দিয়ে কাপাসিয়া হয়ে টোক নয়ন বাজারে যেতে হবে। এছাড়া গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে সরাসরি রাজদূত বা পথের সাথী পরিবহনের গাড়ি দিয়ে টোক নয়ন বাজারে যাওয়া যায়। মহাখালি থেকে টোক বাজারের ভাড়া পড়বে ১১০-১৩০ টাকার মধ্যে।

IMG_20140823_141253 IMG_20140823_141306 IMG_20140823_141404

IMG_20140823_141438        IMG_20140823_134811 IMG_20140823_134840

IMG_20140823_150503

IMG_20140823_144738

IMG_20140823_145440

IMG_20140823_144414

https://www.youtube.com/watch?feature=player_detailpage&v=_mQSrLwDs-A